নরসিংদীর শিবপুরে স্বাক্ষর জাল করে কাবিখা ও টি আর প্রকল্পের ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় (পিআইও) শিবপুর অফিসের দুই কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন, শিবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কার্য সহকারী আরিফুল ইসলাম তুহিন (৩৫) এবং পিয়ন (আউটসোর্সিং) আশিক ভূঞা (২৫)। আশিকুর রহমান তুহিন শিবপুর উপজেলা সদরের হোসেন আলীর ছেলে ও আশিক ভূঞা একই উপজেলার খড়িয়া এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে।
এ সময় তুহিনের বাসা থেকে প্রকল্পের ৫২ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার তাদের গ্রেপ্তার ও টাকা জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। এর আগে গত সোমবার রাত ৩টার দিকে কার্য সহকারী (প্রজেক্ট) কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম তুহিনের বাসায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)। ওই সময় তার বাসায় থাকা নগদ ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
শিবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) অফিস ও এনএসআই সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প টিআর/কাবিখা’র প্রকল্প থেকে ভুয়া বিল ভাউচার ও পিআইও’র স্বাক্ষর জাল করে ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা উত্তোলন করে নেয় অফিসের কার্য সহকারী (প্রজেক্ট) কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম তুহিন ও পিওন আশিক। এরই মধ্যে গত ১৫ জুন শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিআর/কাবিখা প্রকল্পে ১৯১টি বিল হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দেয়। কিন্তু বাজেট না থাকায় ৮১টি বিল (বাউন্স হয়) ফেরত আসে। বিষয়টি নিয়ে অফিস জুড়ে হৈচৈই পড়ে যায়। পরে গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) বিষয়টি নিয়ে গোপনে অনুসন্ধান শুরু করেন। ওই সময় ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে পিআইও অফিসের ২ জন কর্মচারী সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার রাত ৩টার দিকে এনএসআই কর্মকর্তারা পিআইও অফিসের কার্য সহকারী (প্রজেক্ট) কর্মকর্তা তুহিনের বাসায় অভিযান চালায়। ওই সময় তার আলমিরাতে থাকা নগদ ৫২ লাখ টাকা দেখতে পায়। কিন্তু এই টাকার সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেনি তুহিন।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে পুলিশ নগদ টাকাসহ তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক তুহিন ও আশিক স্বাক্ষর জাল করে ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা উত্তোলনের কথা শিকার করেন। শিবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রকল্পে ১৯১টি বিল হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দেওয়া হলে ৮১বিল বাউন্স হয়। তারা জানান ৮১টি বিল তুলে নেওয়া হয়েছে। তখন অমরা তাদের কাছে বিল ভাউচার নেওয়া হয়। সেখানে স্বাক্ষর জালের বিয়টি ধরা পরে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে এনএসআই তদন্ত করে তুহিন ও আশিকের সংশ্লিষ্টতা পায়। পরে তুহিনের বাসায় অভিযান চালিয়ে ৫২ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
শিবপুর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, পিআইও এর অভিযোগেরভিত্তিতে তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৫২ লাখ টাকা ও জব্দ করা হয়েছে। অভিযোগটি দুদকে প্রেরণ করে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হবে।