কক্সবাজার সৈকতের হিমছড়ি পয়েন্ট সাগরে গোসলে নেমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নিখোঁজ শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানের চারদিনেও সন্ধান মেলেনি। তবে তাকে উদ্ধারে পঞ্চম দিনে এসে লাইফগার্ড, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিচকর্মিদের পাশাপাশি এবার ড্রোন নিয়ে অভিযানে নেমেছে বিমান বাহিনীর সদস্যরাও। গতকাল শনিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস ইনতেসার নাফি। গত মঙ্গলবার সকাল ৭টায় অরিত্র হাসানসহ তার আরও দুই সহপাঠী সাগরে ভেসে যায়। এদের মধ্যে ভেসে যাওয়ার আড়াই ঘণ্টার মধ্যে কেএম সাদমান রহমান সাবাব (২১) নামের এক শিক্ষার্থীর লাশ একই সৈকতে ভেসে আসে। সাবাব ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা কেএম আনিছুর রহমানের ছেলে।
পরদিন বুধবার সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থলের ২৫ কিলোমিটার উত্তরে শহরের নাজিরারটেক শুঁটকি মহাল সৈকতে আসিফ আহমেদ (২২) নামে আরও এক শিক্ষার্থীর। আসিফ বগুড়া সদরের নারুলি দক্ষিণের বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের ছেলে। নিখোঁজ অরিত্র হাসান বগুড়া সদরের নিধনিয়া দক্ষিণ পাড়ার মো. আমিনুল ইসলামের ছেলে। মৃত উদ্ধার ও নিখোঁজ তিনজনই চবির ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র। নিখোঁজ অরিত্র হাসানের সন্ধানে ঘটনার পর থেকে সাগর ও উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস ইনতেসার নাফি।
তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিস, লাইফগার্ড, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিচকর্মীদের সমন্বয়ে ঘটনার পর থেকে উদ্ধার তৎপরতা রয়েছে। উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় খবর দেওয়া হয়েছে।
গত ৪ দিন ধরে হিমছড়ি থেকে নাজিরারটেক পয়েন্ট পর্যন্ত সৈকত ও সাগরের পাশাপাশি সোনাদিয়া, কুতুবজোম, মাতারবাড়ী ও ধলঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে। পর্যটনের সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ কর্মকর্তা বলেন, তবে শুক্রবার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জেলা প্রশাসনের জরুরি এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে সিদ্ধান্ত মোতাবেক গতকাল শনিবার সকাল থেকে নিখোঁজ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে একজন পাইলটসহ ড্রোন নিয়ে বিমান বাহিনীর ৩ সদস্যও অভিযানে অংশ নিয়েছে। উদ্ধার তৎপরতায় অংশগ্রহণকারিরা সাগর ও উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালালেও এখনও নিখোঁজ শিক্ষার্থীর সন্ধান মিলেনি বলে জানান, নাফিস ইনতেসার নাফি।
সী সেইফ লাইফগার্ড সংস্থার সুপারভাইজার মোহাম্মদ ওসমান গনি জানান, নিখোঁজ শিক্ষার্থীর খোঁজে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের মহেশখালী থেকে টেকনাফের নাফ নদীর মোহনা পর্যন্ত উদ্ধারকর্মীরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।
লাইফগার্ড, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিচকর্মিদের পাশাপাশি বিমান বাহিনীর ৩ সদস্যও উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, হিমছড়ি সৈকতে একাধিক গুপ্তখালের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সেখানে গোসল করা ঝুঁকিপূর্ণ ও উদ্ধার তৎপরতাও নেই। নিহত শিক্ষার্থীরাও গুপ্তখালে আটকা পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে মনে করছেন তিনি।