দুই দিন আগে বাবা মেয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়েছিল। বাবা দুই মাস পরে দেশে আসবেন। মেয়ের পছন্দের জুস নিয়ে আসবেন সঙ্গে করে। জমানো অনেক কথা হবে গল্প ও হবে মেটানো হবে মেয়ের আবদার। দুই মাস নয় বাবা বনী আমিন ফিরেছেন দুই দিন পরে জুস ছাড়া খালি হাতে। বাবা মেয়ের সঙ্গে দেখাও হয়েছে তবে সেই দেখাটাই শেষ দেখা। কথা হয়নি আর কখনও হবেও না। জমানো কখা আর জুসের আবদার নিয়ে না ফেরার দেশে ফাতেমা। কুয়েত প্রবাসি বনী আমিন। দেড় বছর আগে দেশ থেকে ছুটি কাটিয়ে আবারও ফিরেছেন কুয়েতে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বরে দেশে ফেরার কথা ছিল তার। তিন সন্তানের মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার প্রথম সন্তান। বাকি দুইজন পুত্র সন্তান। গত সোমবার বিমান দুর্ঘটনায় একমাত্র কন্যা সন্তান ফাতেমা নিহতের খবর পেয়ে সোমবার রাত দেড়টার দিকে ছুটে এসেছেন দেশে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে জানাযা শেষে নিজ গ্রাম চিতলমারি উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের কুনিয়া গ্রামে কুনিয়া কওমী মাদ্রাসা কবর স্থানে দাফন করেছেন কলিজার টুকরা সন্তানকে। দেশে ফেরার পর থেকে বাবা ও মা দুজনেই বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন, বিলাপ করছেন সন্তান হারানো বেদনায় । নিহতের ফুফাতো চাচা সৈয়দ নোমান হোসেন, বলেন, বাবা মেয়ের সঙ্গে দুই দিন আগে কথা হয়েছিল ফোনে তখন বাবা মেয়েকে বলেছিলেন দুই মাস পরে ছুটিতে দেশে আসবেন তিনি। তখন মেয়ের কাছে পছন্দের খাবার কি নিয়ে আসবেন জানতে চাইলে মেয়ে ফাতেমা জুস নিয়ে আসার জন্য বলেছিলেন। নোমান বলেন আমার ভাস্তির জন্য জুস আনা হয়নি আর কখনও জুস আনা হবেও না। তিনি আরও জানান বিমান দুর্ঘনার দুই মিনিট পরে ঘটনাস্থল এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন, উদ্ধার কাজে অংশ ও নিয়েছেন। তখনও জানে না তার ভাতিজি না ফেরার দেশে চলে গেছেন। পরে বাড়ি এসে জানতে পারেন ভাইয়ের মেয়ে ফাতেমাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন করে আবার খুজতে গিয়ে লাশটির সন্ধান পেয়ে তাকে নিয়ে গ্রমের বাড়িতে এসে দাফন সম্পন্ন করেছেন।