ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

তাড়াইলে আমন ধান গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

তাড়াইলে আমন ধান গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু সবুজ আর সবুজ চোখে পড়ছে। ফাঁকা নেই যেন ফসলের মাঠ। রোদণ্ডবৃষ্টির খেলায় সবুজের আভা ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। নীল আকাশের সাদা মেঘের ভেলা, যেন সবুজের গাঢ় রং একাকার হয়ে আছে। গরম আর হাল্কা হাওয়ায় আপন মনে দোল খাচ্ছে আমন খেত। আমন খেতে সবুজের ঢেউ খেলান এমন দৃশ্য চোখে পড়ছে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে উপজেলার সর্বত্রই।

এদিকে কৃষকদের স্বপ্ন পূরণে ক্ষুধা মুক্ত, খাদ্যে স্বনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকারও। সেই সঙ্গে কৃষি বিভাগের আন্তরিকতায় কৃষিতে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। সেই সঙ্গে জমিতে ফলন ভালো ফলাতে নিয়মিত তারা তদারকি করছেন। চলতি মৌসুমে এ উপজেলার কৃষকরা রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে হাল চাষ, সেচ পানি দিয়ে আমন আবাদ করছেন। আর কৃষকের আগামীর সোনালি স্বপ্ন যেন লুকিয়ে আছে সবুজ ধান খেতের মাঝে। এরমধ্যে এ ধানের খেতকে ঘিরে স্থানীয় কৃষকরা যেন স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করেছেন।

তাড়াইল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমি। হাইব্রিড ৫৩০ হেক্টর, উফশী ৭ হাজার ২৪০ হেক্টর, স্থানীয় ৫ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ৭ হাজার ৭৩৩ হেক্টর জমি। হাইব্রিড ৫৩০ হেক্টর, উফশী ৭ হাজার ২০০ হেক্টর, স্থানীয় ৩ হেক্টর।

গত বোরো মৌসুমে উন্নত প্রযুক্তির বীজ আর সেচ সুবিধা ভালো থাকায় ধান আবাদে তাদের ফলন ভালো হওয়ায় এবার আমনে তাদের উৎসাহ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আমন ধান রোপণের পর জমিতে ভালো পরিচর্যা নেওয়ায় মাঠের অবস্থা খুবই ভালো। এখন পর্যন্ত যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে স্থানীয় কৃষকরা বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন। রোগ বালায়ের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে কৃষকদেরকে ধান জমিতে কঞ্চি ও গাছের ডাল পুঁতে পাখি দিয়ে পোকা মাকড় দমনে তারা উৎসাহিত করছেন। বোরোর চেয়ে আমন আবাদে জমিতে ফলন ভালো ফলাতে কৃষকরা চেষ্টা করছেন।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার তালজাঙ্গা, রাউতি ও তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের মাঠে মাঠে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আমন খেতে সবুজে সমারোহ হয়ে আছে। সবুজে ঘেরা আমনের মাঠে কৃষক ব্যস্ত সময় পার করছেন। শেষ পযর্ন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ মৌসুমে আমনের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষক ছফর উদ্দীন বলেন, এ মৌসুমে ৪ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। সময় মতো সার দেওয়াসহ সঠিকভাবে জমির পরিচর্যা করায় এখন ধান গাছের অবস্থা খুবই ভালো। জমির যে অবস্থা বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি। অন্য কৃষক মুহিবুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শে এ মৌসুমে ৬ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছি। এক বিঘা জমি আবাদ করতে শ্রমিক মজুরি, সারসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। বর্তমানে জমি সবুজে ভরে গেছে। কিছুদিনের মধ্যে ধানের শীষ আসবে। নিয়মিত জমির পরিচর্যা করা হচ্ছে। আশা করি গত বছরের চাইতে এবার ভালো ফসল ঘরে তুলতে পারব।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিকাশ রায় বলেন, বর্তমানে আমন ধানের খেতগুলো পাকতে শুরু করেছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। জমিতে ফলন ভালো করতে সার্বিকভাবে স্থানীয় কৃষকদেরকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করা যায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত