
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে সাত জনে দাঁড়িয়েছে। এরআগে ছয়জনের মৃত্যুর পর গত সোমবার হায়াত আলী (৪০) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। হায়াত আলীর পরিবারের দাবি, তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে আজ মারা গেছেন। তবে পুলিশ ঘটনাটিকে সন্দেহজনক মৃত্যু হিসেবে দেখছে। স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানতে পেরেছে, হায়াত আলী নেশাদ্রব্য গ্রহণে অভ্যস্ত ছিলেন।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, তিনি বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে মারা যেতে পারেন। বিষয়টি নিশ্চিত হতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আরও তিনজন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ছাড়াও বেশ কিছু মানুষ অসুস্থ থাকলেও তারা তা গোপন করছেন বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকায় কয়েকজন মিলে অ্যালকোহল পান করেন। এরপর গত শনিবার থেকে একে একে পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
তাদের মধ্যে চারজনকে গোপনে দাফন করা হয়।
গত রোববার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যুর পর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও এলাকাজুড়ে আরও দুই-তিনজনের মৃত্যুর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। মৃতরা সবাই নিম্নআয়ের পেশাজীবী, কেউ ভ্যানচালক, কেউ মিলশ্রমিক, আবার কেউবা মাছ ব্যবসায়ী।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. একেএম নাসিম উজ জামান বলেন, ‘অ্যালকোহলিক পয়জনিংয়ে একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আরও কেউ অন্য রোগের কথা বলে ভর্তি হয়ে থাকতে পারেন। এদিকে, চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল অসুস্থদের খোঁজখবর নিতে ও তাদের জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ডিঙ্গেদহ এলাকায় পরিদর্শনে যায়। তবে এলাকায় গিয়ে তারা এক বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হন- অসুস্থ হয়েও কেউ স্বীকার করছেন না যে তারা মদপান করেছেন।
প্রতিনিধি দলের প্রধান ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, মদপানে অসুস্থ কেউ যেন গোপনে অপচিকিৎসার শিকার না হন।
স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে এই রোগীদের জন্য বিনামূল্যে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জামাল আল নাসের জানান, ‘আজ একজনসহ মোট সাতজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এদের মধ্যে চারজনকে গোপনে দাফন করা হয়েছে। দুইজনের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। আরও তিনজন হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি অ্যালকোহলিক পয়জনিং। ঘটনাটি তদন্তাধীন।