
পানি নিষ্কাষণের ব্যবস্থা না থাকায় ভোলার চরফ্যাশনের রসুলপুর ইউনিয়নে প্রায় ১০০ একর জমি অনাবাদি রয়েছে। আবাদযোগ্য জমি অনাবাদি থাকায় স্থানীয় কৃষক পরিবারগুলোতে হতাশা ও দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে। জানা যায়, চরফ্যাশন-দক্ষিণ আইচা মহাসড়ক সংলগ্ন হাজিরোড এলাকায় ১০০ একর জমির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে বর্ষা মৌসুমে গত কয়েক বছর ধরে অনাবাদি রয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য মহাসড়কে সরকারি বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল; কিন্তু প্রভাবশালী মহল ১১নং রসুলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম পণ্ডিতের সহায়তায় পুলের সম্মুখ অংশ ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করে। এতে করে ওই এলাকায় বর্ষা মৌসুমে চরম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। জমির মালিক ও বর্গাচাষিরা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রেখে বাড়ি নির্মাণের অনুরোধ করলেও চেয়ারম্যান তাতে কোনো কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ করেন বেল্লাল হাজারি, মাইনুল হাজারি ও সবুজ হাজারিসহ স্থানীয় কৃষকরা। এদিকে কালভার্টের পূর্ব দক্ষিণ কর্ণারে দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের জমিতে বাঁধ দিয়ে মৎস্য খামার নির্মাণ করায় জলাবদ্ধত আরও প্রকট আকার ধারণ করে। ফলে এখানকার জমির মালিক ও বর্গাচাষি কৃষকরা প্রতি বর্ষা মৌসুমে বিপুল পরিমাণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কৃষক বেল্লাল হাজারি বলেন, রসুলপুর ইউনিয়নের দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে এসব জমি বর্ষা মৌসুমে আমন ধান চাষের জন্য উপযোগী করতে পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জমি চাষ ছাড়া ও বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় অন্তত ৮-১০টি পরিবারের লোকজন পানিবন্দি জীবন যাপন করতে হয় বলে ও জানান, শামসুদ্দিন বেপারি, ছিদ্দিক মাঝি, আজিজ ও গনি সরদারসহ ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, অল্প বৃষ্টিতেও এখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বর্ষায় বৃষ্টিপাতের কারণে জমিতে পানি জমে থাকায় আমন চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না। স্থানীয় গণি সিকদার বলেন, ব্রিজের সামনে বসতি না থাকলে কোনো জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো না। জলাবদ্ধতা দূরীকরণে তিনিসহ এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, বিষয়টা সমাধানের দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসনের, তবে কৃষকরা এ বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে আমরা সহযোগিতা করব। এ ব্যাপারে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসনা শারমিন মিথি মোবাইলের রিং রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।