
অনুকূল আবহাওয়া আর সঠিক পরিচর্যায় শীতকালীন সবজি চাষে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন নরসুন্দা নদী বিধৌত কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের কৃষকরা। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মাঠজুড়ে এখন শুধু সবুজের সমারোহ, যেদিকে চোখ যায় শুধু শীতের সবজির পরিচর্যার দৃশ্য। সবজি খেত নিংড়ানো, আগাছা পরিষ্কার ও পানি দিতে ব্যস্ত কৃষক ও কৃষাণীরা। নরসুন্দা নদী বিধৌত এই উপজেলার ভূমি বিন্যাস উর্বর হওয়ায় প্রচুর শীতকালীন শাক-সবজি চাষ হয়ে থাকে। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই কৃষকরা নেমে পড়েন খেতের কাজে। এ যেন পরিশ্রম আর আশার এক রঙিন উৎসব।
নানা জাতের শীতকালীন সবজিতে ভরে উঠেছে গ্রামীণ এই জনপদ। চাষ করা সবজির মধ্যে রয়েছে বেগুন, করলা, লাউ, লালশাক, পালংশাক, লালশাক, ফুলকপি, বাঁধকপি, মুলা, টমেটো, শিম ও ধনেপাতাসহ বিভিন্ন রকমের সবজি। কৃষকরা বলছেন, পাইকারি ও স্থানীয় বাজারে সবজির চাহিদা ভালো থাকায় এ বছর লাভের মুখ দেখার প্রত্যাশা আগের বছরের তুলনায় আরও বেশি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে এক হাজার ২০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৬ হাজার ৭২৪ হেক্টর জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সবজির ভালো ফলনের জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আরও জানা যায়, নভেম্বরের শুরু থেকেই স্থানীয় বাজারে আগাম ফুলকপি, লাউসহ নানা জাতের সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে।
প্রতিবছর এ উপজেলায় উৎপাদিত সবজি উপজেলার চাহিদা পূরণ করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা পূরণ করে থাকে। তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের কালনা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে আমাদের এলাকায় প্রতি বছরই বাড়ছে শীতকালীন সবজি চাষের জমির পরিমাণ। অন্যান্য ফসলের চেয়ে শীতকালীন সবজি আবাদ করে বেশি লাভবান হওয়া যায়।
এ কারণে আমি প্রতি বছরই সবজি চাষ করি। তাতে বাজারে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদাও থাকে, আবার লাভবান হওয়া যায়। অন্য কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, আমাদের এই সবজি বাজারে উঠার পরই সংকট কেটে যাবে। আশা করছি, এ বছর সবজি চাষে লাভবান হব।
তাড়াইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বিকাশ রায় জানান, এ উপজেলা সবধরনের সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত। প্রতি বছর উপজেলায় বিপুল পরিমাণ সবজির চাষ হয়। এর ফলে বাজারে সবজির সংকট কেটে গিয়ে দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে চলে আসে।