
সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে অর্থকারী ফসল সুপারির ফলন দ্বিগুণ হওয়ায় হাট-বাজারগুলো কেনা-বেচায় এখন জমজমাট। তবে, বাজার দর গত বছরের তুলনায় কুড়িতে ২০০ টাকা কম। তবুও হতাশ নয় কৃষক। প্রতি হাটে প্রায় কোটি টাকার সুপারি যাচ্ছেন রাজধানী শহরে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে বিভিন্ন গ্রামে এ বছরে সুপারির বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি, প্রত্যন্ত গ্রামের হাট বাজারগুলো এখন সুপারি কেনাবেচা জমে উঠেছে। এ উপজেলার সন্ন্যাসী, বৌলপুর, চিংড়াখালী, পল্লীমঙ্গলসহ বিভিন্ন বাজার থেকে সপ্তাহের প্রতি হাটে দুই দিনে বস্তাভর্তি করে লাখ লাখ সুপারি ট্রাকযোগে যাচ্ছেন ঢাকার সৈয়দপুর, নীলফামারী, দিনাজপুর, বন্দর নগরী চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে। বেপারিরা কেনা বেচায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলা থেকে প্রায় কোটি টাকার সুপারি রপ্তানি হচ্ছে। আবার অধিকাংশ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই সুপারি কিনে ৬০ শতাংশ পানিভর্তি পাত্রে ভিজিয়ে রাখেন। ৪০ শতাংশ সুপারি দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ ও রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়।
সন্ন্যাসী বাজারে সুপরি আব্দুল হালিম বেপারী, ফেরদৌস বেপারী, মহারাজ মল্লিকসহ অনেকে বলেন, ২৫-৩০ বছর ধরে এ সুপারি ব্যবসার করছেন। এ বছরের সুপারির ফলন বিগত ২-৪ বছরে হয়নি। সুপারির সাইজও বড়। তারা ৩০০-৩৫০ টাকা প্রতি কুড়ি ক্রয় করে বস্তায় ভর্তি করে ট্রাকে করে বিভিন্ন শহরের আড়তে পাঠাচ্ছেন। বড়পরী গ্রামের কৃষক শাহজাহান শেখ, ফাঁসিয়াতলা গ্রামের মন্নান শেখ, শফিকুল হাওলাদার, চিংড়াখালী গোপালপুর গ্রামের কৃষক মিলন বক্স বলেন, সাড়ে ১০ বিঘার ৫টি সুপারি বাগানে গড়ে ১ থেকে দেড় লাখ ফলন পেয়েছে গত বছরে ৫০০ টাকা দরে কুড়ি বিক্রি হয়েছে। এ বছর সুপারির সাইজ ভাল হলেও সাড়ে ৩০০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে, গত বছরের চেয়ে প্রতিটি ছড়ায় দ্বিগুণ সুপারি পেয়েছেন। সেক্ষত্রে পুষিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে- এ উপজেলার হোগলাপাশা, বনগ্রাম, চিংড়াখালী রামচন্দ্রপুর, বাধাল বাজার, খাউলিয়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি সুপারি ফলন হয়েছে। ৭২০ হেক্টর সুপারি ফসলের বাগান ও ৩০ হেক্টর তথা ২৫৯০টি বসতবাড়ির বাগানে গত বছরের চেয়ে ফলন হয়েছে দ্বিগুণ। এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলীয় এ উপজেলায় অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে দিন দিন সুপারি গাছ কমে যাচ্ছে। এক সময়ের অনেক বড় বড় সুপারি বাগান চোখে পড়ছে না। তার পরেও কয়েকটি ইউনিয়নে এ বছরে সুপারি ফলন খুবই ভালো হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ার করণে এ অঞ্চলের কৃষক অর্থনৈতিক বাজারে এর একটি বিশেষ ভূমিকা রাখছেন।