
শ্যামনগর উপজেলাজুড়ে চলছে আমন ধান কাটা মাড়াইয়ের উৎসব। কৃষক নতুন ধান কাটা, মাড়াই ও সংগ্রহ করতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। সেইসঙ্গে ধানের জমিতে আগাম জাতের অন্য ফসল চাষেরও প্রস্তিতি নিচ্ছেন। ধানের ফলনে খুশি হলেও দাম কম হওয়ায় শঙ্কিত তারা। কৃষি বিভাগ বলছে, কাঁচা ধানের দাম কিছুটা কম হলেও শুকিয়ে বিক্রয় করলে ভালো দাম পাওয়া যায়। তাছাড়া অসময়ে ধান বিক্রির টাকা অন্য ফলন উৎপাদনে সহায়ক। উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া আমন ধান চাষের জন্য বেশি উপযোগি।
উৎপাদন ভালো হয় বলে এ উপজেলা ধান উৎপাদনের উপজেলা হিসাবে বেশ পরিচিত। বর্তমানে শ্যামনগর উপজেলায় চলিত আমন মৌসুমে আগাম জাতের রোপা আমন ধান কাটার উৎসব শুরু হয়েছে। কেউ হাত দিয়ে কাটছে আবার কেউ হারভেস্টার মেশিন দিয়ে আগাম ধান কাটা মাড়াই করে বিক্রি করছেন। বাজারে কাঁচা ধান ১১০০-১১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ (৪০) কেজি ধান। অসময়ে আগাম ধানের কাজ পেয়ে খুশি কৃষিশ্রমিকরা। ধানবিক্রর টাকায় কৃষকেরা অন্য ফসল চাষ করছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন আগাম জাতের ধানের চাষ হয়েছে। জেলার সদর উপজেলার কাশিমাড়ি গ্রামের কৃষক আহসান হাবীব সিয়াম বলেন, আমরা এখন ধান কাটছি। ধান কাটার পরে আলু লাগানোর কাজ করবো। অসময়ে যখন কাজ নেই অভাব অনটনে দিন পার হয় তখন ধান কটার কাজ করে পরিবার ভালো চলছে। এখন আমরা আর বসে নেই। সব সময় কাজের মধ্যে আছি। আগাম ধান হওয়ার কারণে আমাদের কাজ কর্মের ব্যাবস্থা হয়েছে। চন্ডিপুর গ্রামের কৃষক জনার্দন বলেন, আবহাওয়া ভালো আছে সে কারণে ধান কাটছি।
আশা করি ফলন ভালো হবে। আশা করি দামও ভালো পাবো। বিনা ১৭ জাতের ধান কাটছি ৩৩ শতকে ২৫ থেকে ৩০ মন ধান হয়। ধান কাটার পর ওই জমিতে আলুর চাষ করবো। শ্যামনগর উপজেলার দাঁতপুর গ্রামের কৃষক সলেমান কবির বলেন, গত বছর ২০৫০ টাকা বস্তা (৬০ কেজি) ধান বিক্রি করলে এ বছর ১৭০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলন ভালো হলেও দামে পোষাচ্ছে না। কারণ দিন দিন চাষাবাদের খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু ফসলের দাম বাড়ছে না।
এ করণে কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে না। শ্যামনগর উপজেলার কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তারের কৃষিবিদ নাজমুলহুদা বলেন, আগাম রোপা আমন কৃষকের জন্য একটি লাভজনক ফসল। তুলনামূলক উঁচু জমিতে এই আগাম ধান করা হয় মূলত আগাম ধানের পরেই রবি শস্য রোপন করা হয়। স্বল্প মেয়াদী এই ধান উৎপাদনের খরচটা কিছুটা কমে। কাঁচা ধানের দাম কিছুটা কম তবে শুকিয়ে বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যাবে। তবে কৃষকরা তাদের প্রয়োজনে কম দামে হলেও বিক্রি করছেন। এই সময় যে টাকা পাচ্ছেন এটি তার অন্য ফলনের জন্য সহায়তা করছে।