
তীব্র শীত ও ঘনকুয়াশায় মেঘনা উপকূলীয় লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত দুইদিন ধরে কনকনে শীতের সঙ্গে হিমেল হাওয়া বইতে থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার মেঘনা তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবন কাটছে তাদের। হাড়কাঁপানো এ শীতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন নদীভাঙনের কবলে পড়ে বিভিন্ন বেড়িবাঁধের ওপর আশ্রিত ছিন্নমূল মানুষেরা।
জানা গেছে, গত শুক্রবার থেকে উপজেলায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাবে উপজেলার চরকালকিনি, সাহেবেরহাট, চরফলকন, চরলরেন্স, চরকাদিরা, চরজাঙ্গালীয়া, চরমার্টিন ও পাটারীরহাটসহ বিভিন্ন এলাকার নদীভাঙানে অসহায় মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। হাড়কাঁপানো শীতে হাটবাজার ও রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে। শীতে কাবু হয়ে শ্রমজীবী মানুষেরা কাজে যেতে না পেরে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছেন। তবুও এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলার কোথাও শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি। যে কারণে, সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষেরা।
এদিকে, শীতের তীব্রতার কারণে উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলের মানুষের ঘরে ঘরে সর্দি, জ্বর ও নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত নানান রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এসব রোগে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ওইসব রোগে আক্রান্তরা স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিক, স্বস্থ্য কমপ্লেক্স, ফের্মেসি ও হাসপাতালে ভিড় করছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে শিশু ও বৃদ্ধ শ্রেণির রোগীদের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এতে করে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। উপজেলার পাটারীরহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা দিনমজুর কামাল হোসেন জানান, হাড়কাঁপানো শীতের কারণে দুই ধরে কাজে যেতে পারছেন না। এতে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। টাকার অভাবে শীতবস্ত্রও কিনতে পারছেন না।
মেঘনা তীরের বাসিন্দা গৃহবধূ জয়নব বানুর ভাষ্য, এ তীব্র শীতের সময়ে সরকারি সাহায্য পেলে আমাদের জন্য অনেক উপকার হতো।
কমলনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পরিতোষ কুমার বিশ্বাস জানান, উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের জন্য শীতবস্ত্র হিসেবে এক হাজার পিস কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। শিগগিরই এগুলো ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হবে।