ঢাকা সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সংবাদমাধ্যম জাতির পথপ্রদর্শক : চসিক মেয়র

সংবাদমাধ্যম জাতির পথপ্রদর্শক : চসিক মেয়র

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, সংবাদমাধ্যম হলো জাতির পথপ্রদর্শক। সংবাদপত্রকে সমাজ বা জাতির দর্পণ বলা হয়। চলমান জীবন, দেশ ও বিশ্বের একটি চিত্র প্রতিদিন সংবাদপত্রের পাতায় ফুটে ওঠে। আয়নায় দেখা নিজের চেহারার মতো প্রতিবিম্ব সংবাদপত্রে চলমান জীবন, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বের চিত্র ভেসে ওঠে। সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সুষ্ঠু ও সুন্দর সমাজ গঠনে সহায়তা করে। মানুষকে সচেতন করে তোলে। দুর্নীতিবাজ ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতরা আতঙ্কে থাকে। দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার ভয়ে তারা দুর্নীতি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। শোষণ, জুলুম, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে সাংবাদিকরা সোচ্চার থাকে।

সাংবাদিকদের মেধা, মনন, মানবতাবোধ থেকে উৎসারিত হয় সত্যনিষ্ঠা, নীতিবোধ ও দেশপ্রেম। তাই এসব গুণের অধিকারী সাংবাদিককে বলা হয় জাতির বিবেক। তিনি গত শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে নিউজগার্ডেনের ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকতা পেশার প্রথম ও প্রধান কাজ হলো সততা ও দায়িত্বশীলতা। সৎ, মেধাবী ও নির্ভীক সাংবাদিক জাতির পথপ্রদর্শক। সংবাদপত্র সরকারের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে খ্যাত। সাংবাদিকতা হচ্ছে সমাজসেবার একটি আধুনিক রূপ। সুষ্ঠু ও সুন্দর সমাজ গঠনে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মানুষকে সচেতন করে তোলে। দেশ ও জাতি গঠনে সংবাদপত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

নিউজগার্ডেন সম্পাদক কামরুল হুদার শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর নিউজগার্ডেনের ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন পরিষদের আহবায়ক এসএম আহমেদ হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং গীতিকার ও সাংবাদিক নজরুল ইসলামের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম-৯ সংসদীয় আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবু সুফিয়ান। আবু সুফিয়ান বলেন, সাংবাদিকের মুখ্য ও পবিত্র দায়িত্ব হলো চলমান ঘটনা ও বাস্তবতাকে তুলে ধরা। সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে নেশা সম্পৃক্ত না হলে সে সংবাদ গভীরতা পায় না, সত্যনিষ্ঠ সংবাদের গতি হারায় ও ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ে। সত্যনিষ্ঠা ও নীতিবোধনির্ভর করে সাংবাদিকের দৃষ্টিভঙ্গি, মন-মানসিকতা ও নৈতিকতার ওপর। অসৎ ও দায়িত্বহীন সাংবাদিকতা এ পেশার জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি সমাজ, দেশ ও জাতির জন্যও ক্ষতিকর।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ বলেন, সাংবাদিক এবং জনগণকে ভারতীয় আধিপত্যবাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। দেড় দশক হাসিনা সরকারের স্বৈরশাসন এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের কবলে পড়ে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করেছিল। ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আমাদের এক ধরনের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে রেখেছিল। আর আমাদের সাংবাদিক ভাইদের দুর্নীতির ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদুল করিম কচি বলেন, ভারতীয় আধিপত্যকে বিস্তারের সুযোগ দিয়ে হাসিনা সরকার মানুষের উপর নিপীড়ন-নির্যাতন, খুন, গুম, হামলা, মামলা, গ্রেপ্তার, গণতন্ত্রহীনতা, মানবাধিকার হরণ, অন্যায়, বিচারহীনতা, রাজনৈতিক অধিকার, বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করেছে। বিশ্ব প্রেসকাউন্সিলের সাবেক সদস্য মাঈনুদ্দিন কাদেরী শওকত বলেন, দেড় দশকে ভারতের সঙ্গে যেসব স্বার্থবিরোধী চুক্তি করেছে, সেগুলো জনসমক্ষে প্রকাশ করা, যাতে দেশের মানুষ জানতে পারে। পরবর্তীতে তা রিভিউ করে বাতিল করা কিংবা সমতাভিত্তিকভাবে সংশোধন করা। এদেশের মানুষ আর ভারতের খবরদারি, অন্যায় ও অন্যায্য আচরণ বরদাশত করবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক যুগ্ম পরিচালক বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সামনে যে নির্বাচন তা অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করা, নির্ভয়ে প্রার্থী বাছাই করা, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচারণায় সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, স্বচ্ছ ভোট প্রক্রিয়া অনুসরণ করা এবং নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা, যাতে একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত