ভারত থেকে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ ঘোষণা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে। নতুন প্রজ্ঞাপনটি ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে জারি করা হয়েছে। এনবিআর জানায়, বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারীসহ সব স্থলবন্দর দিয়ে এখন থেকে সুতা আমদানির অনুমতি থাকবে না। তবে সমুদ্রপথ বা অন্য কোনো উপায়ে সুতা আমদানি চালু থাকবে। এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) স্থলপথে ভারতীয় সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায়। সংগঠনটি দাবি করে, তুলনামূলক কম দামে ভারতীয় সুতা দেশে প্রবেশ করায় স্থানীয় সুতা উৎপাদনকারীরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। মার্চ মাসে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো এক চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পের সুরক্ষায় স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ করার সুপারিশ করে। ট্যারিফ কমিশনের মতে, স্থলবন্দরগুলোতে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সুতা কাউন্ট নির্ধারণ ও পরীক্ষা করার জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামো এখনও গড়ে ওঠেনি। এই পরিস্থিতিতে সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। সূত্রে জানা গেছে, ভারতের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত সুতা প্রথমে কলকাতায় গুদামজাত করা হয় এবং পরে সেখান থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি হয়। এসব সুতা মূলত স্থলবন্দর দিয়ে ঢুকতো এবং দামেও ছিল অপেক্ষাকৃত কম। ফলে দেশীয় সুতা কারখানাগুলো তাদের উৎপাদিত সুতা বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছিল। চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান ও বাংলাদেশের স্থানীয় সুতার দাম প্রায় কাছাকাছি হলেও, ভারত থেকে স্থলপথে আসা সুতার দাম ছিল অনেক কম। এমনকি তা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘোষিত দামের চেয়েও কম দামে দেশে প্রবেশ করতো এসব সুতা। এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘দেশীয় শিল্প রক্ষার স্বার্থে এবং ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ সিদ্ধান্ত দেশীয় সুতা উৎপাদন শিল্পকে খানিকটা স্বস্তি দেবে। তবে আমদানিকারকরা এর ফলে কাঁচামাল সংগ্রহে ব্যয় ও সময় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন।