রাজশাহী কারাগারে থাকা অবস্থায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন পিন্টুর মৃত্যুর ঘটনায় মামলার আবেদন করা হয়েছে। মামলার আবেদনে আসামি হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ২৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি দায়ের হয়। বাদীর পক্ষে বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন মামলার এজহার দায়ের করেন। আদালতে তার পক্ষে আইনজীবী আবদুল মালেক রানা মামলার আবেদন উপস্থাপন করেন।
আদালতে রিন্টুর সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহীর সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুর্নবাসনবিষয়ক সহ-সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু, নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, ছাত্রদল নেতা এমদাদুল হক লিমনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। মামলার আরজিতে দেখা গেছে, আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ঢাকার সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আসাদুজ্জামান কামাল, আনিসুল হক, হাজী মো. সেলিম, সোলায়মান সেলিম, ইরফান সেলিম, মনির হোসেন ওরফে কোম্পানি মনির ওরফে স্প্রিট মনির ও এএস শরিফ উদ্দিন ওরফে ব্ল্যাক শরিফ। এছাড়া তৎকালীন আইজিপি, তৎকালীন আইজি প্রিজন, তৎকালীন ঢাকা ও রাজশাহীর ডিআইজি প্রিজন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের তৎকালীন সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম, জেলার শাহাদত হোসেন, কারা চিকিৎসক আবু সায়েম, কয়েদি রাব্বানী ও বিডিআর বিদ্রোহ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু কাহার আকন্দের নাম রয়েছে তালিকায়।
প্রসঙ্গত, ছাত্রদলের সভাপতি থাকা অবস্থায় ২০০১ সালের নির্বাচনে লালবাগ-কামরাঙ্গীরচর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নাসির উদ্দিন পিন্টু। পরে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হন। পিলখানা হত্যা মামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। এ ছাড়া একটি অস্ত্র লুটের দায়ে তার ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল।
এদিকে, ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল পিন্টুকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কয়েকদিন পরে তিনি অসুস্থ বোধ করলে ২৬ এপ্রিল তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর তাকে ফের কারাগারে নেয়া হয়। পরে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে চিঠি দিয়ে কারাগারে চিকিৎসক ডাকা হয়। চিঠি পেয়ে একজন চিকিৎসক গেলেও তাকে কারাগারে ঢুকতে দেয়া হয়নি। ২০১৫ সালের ৩মে দুপুরে কারাগার থেকে পিন্টুকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ কারণে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন-২০১৩ এর ৭ (১) ধারামতে আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়েছে।