ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

অবশেষে চালু হলো চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের সব সেবা

অবশেষে চালু হলো চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের সব সেবা

অবশেষে চালু হলো রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সব সেবা। টানা ১৭ দিন পর এ অচলাবস্থার অবসান হলো।

গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে হাসপাতালটির বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবার টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগের দুটি কাউন্টার থেকে রোগীদের ৯ শতাধিক টিকিট দেওয়া হয়েছে। বেলা ১টা পর্যন্ত চিকিৎসাসেবার এ টিকিট দেওয়া হয়।

শনিবার সকালে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে এক হাজারের বেশি রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন।

এর আগে গত ২৮ মে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংঘর্ষ ও মারামারি হয়। এর জেরে দেশের সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত চক্ষু হাসপাতালের সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়। ভর্তি রোগীদের বেশিরভাগ হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। পরে ৪ জুন হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে সীমিত পরিসরে চিকিৎসাসেবা (জরুরি সেবা) চালু হয়। আর গত বৃহস্পতিবার সীমিত পরিসরে বহির্বিভাগের চিকিৎসাসেবা চালু হয়।

হাসপাতালের ভেতরে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা দেওয়া হচ্ছে। যাদের পরীক্ষার প্রয়োজন তাদের পরীক্ষা করানো হচ্ছে।

হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে কথা হয় রোগী শহীদুল ইসলামের সঙ্গে। দাদি খোদেজা বেগমের চোখের চিকিৎসার জন্য তিনি কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছেন। চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসক তাদের ভর্তি করান। শহীদুল ইসলাম বলেন, দাদির চোখের অস্ত্রোপচার করাতে হবে। মাঝে একবার এসে ফিরে যেতে হয়েছে। আজ সব সেবা চালুর খবর পেয়ে আবার আসি। সব কাগজ জমা দিয়েছি। আসনের ব্যবস্থা হলে নার্স জানাবে বলল, তাই অপেক্ষা করছি।

গাজীপুর থেকে মায়ের চিকিৎসা করাতে আসেন সাইফুল ইসলাম। চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে আসার পর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার মায়ের চোখে রক্ত জমাট বেঁধেছে। চোখের পরীক্ষা করাতে তারা আরওপি স্ক্রিনিং রুমের সামনে অপেক্ষা করছিলেন।

ঈদে বাড়িতে যাওয়া জুলাই আহতদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি : হাসপাতালে থাকা জুলাই আহতদের কয়েকজন ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন। শনিবার সকালে তারা আবার হাসপাতালে আসেন। তাদের ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি।

হাসপাতালের ফটকে কর্মরত আনসার ও পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকে অন্তত পাঁচজন জুলাই আহত রোগী হাসপাতালে প্রবেশ করতে চেয়েছেন। তারা ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফটকে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীরা পরিচয় পেয়ে তাদের ভেতরে ঢুকতে দেননি।

মোক্তারুল ইসলাম নামের এক আনসার সদস্য বলেন, আমাদের ওপর নির্দেশনা রয়েছে। জুলাই আহতদের কেউ এলে তাদের আর প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তাই যারা আসছেন, তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম বলেন, সরকারি আদেশ হলো, এই হাসপাতালে জুলাই আহত আর কোনো রোগীর ভর্তি নেওয়া হবে না। জুলাই আহতদের চারজন রোগী এখনও ভর্তি আছেন। যদিও সরকারের গঠিত কমিটি তাদের ছাড়পত্র দেওয়ার কথা বলেছে। আর একজন ভর্তি ছাড়া হাসপাতালে অবস্থান করছেন। আমরা সবাইকে ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়ার কাজ করছি। হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, জুলাই আহতদের পাঁচজন এখনও অবস্থান করছেন। তবে ভর্তি থাকা চারজন ছাড়া বাকি একজনের খাবার দিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত