হবিগঞ্জ মাধবপুরে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চলতি বছর ৩০০ একর জমিতে গ্রীষ্মকালীন উচ্চ ফলনশীল টমেটোর চাষ হয়েছে। উপজেলাজুড়ে গ্রীষ্মকালীন এই টমেটোর বাম্পার ফলনও হয়েছে। মাধবপুর কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবারে উপজেলায় উন্নত জাতের টমেটো চাষ সফলভাবে কৃষকরা করতে সক্ষম হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল ৩০০ একর জমিতে এই টমেটো চাষ। অনুকূল আবহাওয়া, সুষ্ঠু পরিবেশ ও কৃষি বিভাগের অনুপ্রেরণা থাকায় কৃষকরা উৎসাহ পেয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। বাজারে টমেটো চাহিদা থাকায় মাধবপুর থেকে ঢাকা রাজধানীসহ সারা দেশে টমেটো পাইকারিভাবে ট্রাক, পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে সরবরাহ হচ্ছে প্রতিদিন।
জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর, চৌমুহনী, বহরা, শাহজাহানপুর, জগদীশপুর নোয়াপাড়া ইউনিয়নের উঁচু ভূমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হচ্ছে। সাধারণত জানুয়ারি মাসের শেষে ও ফেব্রুয়ারি শুরুতে টমেটো চাষ করা হয়। ৬০-৭০ দিন পর টমেটো পাকতে শুরু করেছে। এবার সময় উপযোগী হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফসল উৎপাদন হয়েছে। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। সরেজমিন উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের নোয়াহাটি বাজারে দেখা গেছে, কৃষকরা প্রতিদিন সকালে ভ্যানে করে খাঁচাভর্তি করে টমেটো নিয়ে বাজারে আসছেন। ভোর থেকেই চলছে বেচাকেনা। মানভেদে প্রতি কেজি টমোটো ৫০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের কৃষক বধু মিয়া জানান, একটু উঁচু জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমোটো ভালো হয়। পাতলা পলিথিন বিছিয়ে মাটি ঢেকে টমোটোর চারা রোপণ করলে চারা নষ্ট হয়নি। প্রথমে স্বল্প পরিসরে কৃষকরা টমোটোর চাষ করেছিল। লাভজনক হওয়ায় এখন অধিকাংশ কৃষক টমোটোর চাষ করেছে। বর্ষাকালে বৃষ্টিজলে সবজির আবাদ কম হয়। কিন্তু টমোটোর গাছের তেমন ক্ষতি হয় না। প্রতি বিঘায় টমেটো চাষ করতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। সেখানে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি টমেটো বিক্রি করা যায়। খরচ বাদে প্রতি বিঘায় দেড়-দুই লাখ টাকা লাভ হয়।
নোয়াপাড়া বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী শফিক মিয়া বলেন, খুচরা বাজারে ৭০-৮০ টাকা কেজিতে টমেটো বিক্রি করছি। টমোটো খেতে খুব সুস্বাদু। তাই ভোক্তার কাছে চাহিদা বেশি। মাধবপুর উপজেলা কৃৃষি কর্মকর্তা সজিব সরকার জানান, আগে কখনও মাধবপুরে গ্রীষ্মকালে টমোটো চাষ হতো না। কারণ টমোটো শীতকালীন ফসল হিসেবে বিবেচিত ছিল। কিন্তু কৃষি প্রযুক্তির কারণে এখন মাঠে মাঠে দেখা মিলে টমোটোর আবাদ। এ বছর কৃষকরা জৈববালাই নাশক প্রযুক্তিতে টমোটো চাষ করতে কৃষকদের সব রকম পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়েছে। এ কারণে কৃষকরা টমোটো চাষ করে লাভবান।