
পটুয়াখালী সদর উপজেলার হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকার তরুণ নাহিদ ইসলাম শখের বসে শুরু করেছিলেন কোয়েল পাখি পালন। আজ সেই শখই পরিণত হয়েছে সফল পেশায়। প্রায় ৫ হাজার কোয়েল পাখি রয়েছে এখন তার খামারে, প্রতিদিন উৎপাদন হচ্ছে চার হাজারেরও বেশি ডিম। তার এই খামার এখন শুধু আয়ের উৎস নয়, বরং এলাকার তরুণদের জন্য একটি প্রেরণাও। ফাজিল শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম, পেশায় একসময় ছাত্র, এখন একজন সফল খামারি। বাবা মাইনুল ইসলাম স্বপনের সহযোগিতায় শুরু করেন খামার। প্রথমদিকে ৮ জোড়া কোয়েল দিয়ে শুরু হয় তার যাত্রা। হঠাৎ এক সময় সব পাখি মারা যায়। হতাশ না হয়ে তিনি আবার শুরু করেন নতুন উদ্যমে। পরিবারের শুরুতে অনাগ্রহ থাকলেও এখন সবাই তাঁর পাশে।
নাহিদ বলেন, একবার সব পাখি মারা যাওয়ায় খুব ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু হাল না ছেড়ে আবার শুরু করি। এখন প্রতিদিনই আয় হচ্ছে, অনেকেই আমার খামার দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। খরচ তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় কোয়েল পালন এখন লাভজনক একটি উদ্যোগে পরিণত হয়েছে নাহিদের জন্য। তিনি জানান, একটি খাওয়ার উপযোগী কোয়েল বিক্রি করছেন ৬০ টাকায় এবং প্রতি হালি ডিম ১০ টাকা করে। নাহিদের খামার দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন আশপাশের মানুষ। পরামর্শ নিচ্ছেন, অনেকে নিজেরাও খামার শুরু করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, নাহিদের খামার দেখে আমরা সাহস পাচ্ছি। সে আমাদের চোখে সফলতার উদাহরণ। স্থানীয় আরেক যুবক শাহীন মিয়া জানান, খরচ কম লাগে। তাই আমরাও ভাবছি ছোট পরিসরে কোয়েল পালনের কথা।
নাহিদের মতে, কোয়েলের মাংস ও ডিমের বাজার এখনও অনেকটা সীমিত। তাই কখনও কখনও লাভের পরিমাণ কমে যায়। এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলুল হক সরদার জানান, নাহিদের মতো তরুণ উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিতে আমরা প্রস্তুত। প্রাণিসম্পদ বিভাগ সবসময় পাশে থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পালনের জন্য উপযোগী। কম জায়গায় কম খরচে এই খামার গড়ে তোলা যায়। কোয়েল পালনের মাধ্যমে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় অবদান রাখা সম্ভব।
ক্যাপশন: পটুয়াখালী সদরের হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকার তরুণ উদ্যোক্তা নাহিদ ইসলামের কোয়েলের খামার। গতকালের ছবি