বাংলাদেশ বডিবিল্ডিং ফেডারেশনের সাবেক সাধারন সম্পাদক, কুস্তি ফেডারেশনের সদস্য ও সাবেক ‘মিস্টার বাংলাদেশ’ আর নেই। গতকাল বুধবার ভোরে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন। বাদ যোহর বংশাল বড় জামে মসজিদে নামাজে জানাজার পর আজিমপুর কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। বেশ কদিন ধরেই শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না সাবেক মিস্টার বাংলাদেশ নজরুল ইসলামের। তার ওপর দুদিন ধরে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন বডিবিল্ডিং ফেডারেশনের এই সাবেক সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু হাসপাতাল থেকে আর বাড়ি ফিরতে পারেননি। নজরুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ শরীরগঠন ফেডারেশনের সাবেক সদস্য নুরুল ইসলাম নাইম। নজরুল ইসলাম এক যুগেরও বেশি সময় বাংলাদেশ শরীর গঠন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
তিনি পড়াশোনা করেন স্কুল জীবনে আরমানিটোলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হন। খেলোয়াড় জীবনে বডিবিল্ডিং, কুস্তি ও জুডো চর্চা করেছেন। জাতীয় কুস্তি প্রতিযোগিতায় দুবার রুপা জিতেছেন। জুডোতে ব্রাউন বেল্ট পেয়েছেন। এছাড়া বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণ জিতেছেন। পেয়েছেন মিস্টার বাংলাদেশ খেতাব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফজলুল হক হলের ছাত্র সংসদের সহ-ক্রীড়া সম্পাদক হন একবার। এরপর ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় এফএইচ হল ব্যায়ামাগার প্রতিষ্ঠাসহ বডিবিল্ডং প্রতিযোগিতা আয়োজন করেন। তিনি বাংলাদেশের একমাত্র বডিবিল্ডিং জাজ যার আন্তর্জাতিক শরীর গঠন প্রতিযোগিতায় বিচারক হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। বছর দেড়েক আগে জাতীয় প্রতিযোগিতায় বডিবিল্ডারের লাথিকাণ্ডে শরীর গঠন ব্যাপক আলোচনায় আসে। ফেডারেশনের ফলাফল পক্ষপাত নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। পরবর্তীতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তদন্ত কমিটি করে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণের পর অ্যাডহক কমিটি করে। সেই কমিটিতে নজরুল ইসলাম ছিলেন না। কমিটিতে না থাকলেও শরীর গঠন নিয়ে চিন্তাভাবনা করতেন নজরুল। নজরুলের বিদায় বাংলাদেশের শরীর গঠনে শূন্যতা বিরাজ করবে। নজরুল ইসলামের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ), বাংলাদেশ জিম মালিক সমিতি, শরীর গঠন ফেডারেশন, কুস্তি ফেডারেশন ও ভারোত্তোলন ফেডারেশন।