নেপালকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই পাঁচ ম্যাচের কাবাডি টেস্ট সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে নেপালকে ৪৯-২৪ পয়েন্টে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। এই ম্যাচ জিতলে এক ম্যাচ আগেই সিরিজ নিশ্চিত এমন যখন সমীকরণ বাংলাদেশের, তখন সিরিজে টিকে থাকতে জয় ছাড়া বিকল্প ছিল না নেপালের। প্রথম ম্যাচে দাপুটে জয়ের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে সেই রূপে খুঁজে পাওয়া যায়নি বাংলাদেশকে। তবে চতুর্থ ম্যাচের শুরু থেকে আগের ছন্দে ছিল মিজান, দিপায়নরা। এদিন ম্যাচের ছয় মিনিটে প্রথম লোনা পায় বাংলাদেশ। মিনিট তিনেক পর দ্বিতীয় লোনা পেয়ে ম্যাচে আরও এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। প্রথমার্ধে ১৩ পয়েন্টের ব্যবধানে লিড নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধেও দারুণ উজ্জীবিত ছিলেন কোচ বাদশা মিয়ার শিষ্যরা। স্বাগতিকরা শুরুতে আরও দুইটি লোনা পাওয়ায় অনেক পিছিয়ে পড়ে নেপাল। সেখান থেকে আর খেলায় ফিরতে পারেনি তারা। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মিজানুর রহমান। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক দুই খেলোয়াড় আমির হোসেন পাটোয়ারী ও সুবিমল চন্দ্র দাস।
তবে ম্যাচে হারার পেছনে আম্পায়ারিংকেই দুষলেন নেপালের কোচ লোক বাহাদুর বিস্ট। তার কথা, ‘পুরো সিরিজজুড়ে বাজে আম্পায়ারিং হয়েছে। নেপালে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানালে, সেখানে আমরা ৫-০তে জিতব।’ ম্যাচে আম্পায়ারিং সিদ্ধান্ত বিতর্কিত হয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের খেলোয়াড় রেইড দেন। তখন স্কোরলাইন বাংলাদেশ ৩৫-১৯ নেপাল। সফরকারী খেলোয়াড়রা বাংলাদেশের রেইডারকে ঘিরে ধরেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের রেইডার সেন্টার হাফে হাত স্পর্শ করেন এবং হুইসেলও বাজে। নেপালের দাবি আগে হুইসেল বেজেছে এবং বাংলাদেশের খেলোয়াড়ের রেইড শেষ হয়েছে। অন্য দিকে বাংলাদেশের দাবি রেইড থাকাবস্থায় নিজেদের কোর্টে হাত স্পর্শ হয়েছে। রেফারেলে বাংলাদেশের পক্ষে সিদ্ধান্ত যায় এবং নেপালের তিন খেলোয়াড় বাংলাদেশের খেলোয়াড়কে স্পর্শ থাকায় বাদ পড়েন। আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ জানিয়ে নেপাল কোর্ট ছাড়ে। মিনিট দশেক খেলা বন্ধ থাকে। এরপর সম্মানার্থে নেপাল কোর্টে ফেরে যদিও খেলায় সেই অর্থে মন ছিল না তাদের। তাই খেলার পর নেপালের একাধিক খেলোয়াড় রাগ উগরে দেন, ‘আমাদের বিপক্ষে অনেক ফাউল হলেও গণ্য করা হয়নি। যে ঘটনায় মাঠ ত্যাগ করা হয়েছিল সেই ঘটনা আমাদের পক্ষেই সিদ্ধান্ত আসার কথা।’
এ বিষয়ে সিরিজের টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল হক আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেন, ‘হুইসেল এবং রেইডারের হাত একই সময় স্পর্শ করেছে। এজন্য সংশয় তৈরি হয়েছে। রেফারেলে দেখা গেছে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে রেইডার হাত সেন্টার লাইনে স্পর্শ করেছে।’ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কাবাডিতে আম্পায়ারিং নিয়ে নিয়মিত অভিযোগ উঠে। গত চার বছর আয়োজিত আন্তর্জাতিক কাবাডিতে বিদেশি অনেক দলই আম্পায়ারিং নিয়ে অভিযোগ করেছে। এবার দ্বিপাক্ষিক সিরিজে নেপালও করল।