
দশ বছর ধরে মালয়েশিয়াতে বসবাস করছেন। সেই ২০১৫ সাল থেকেই মালয়েশিয়ায় ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ব্যাডমিন্টন শেখান বাংলাদেশের ময়নুল ইসলাম মুন্না। খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারটা খুব বেশি দূর এগিয়ে নিতে না পারলেও কোচ হিসাবে যত সময় যাচ্ছে, নিজেকে শিখড়ে তুলে নিচ্ছেন সিলেটের ময়নুল। ঢাকায় চলমান ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জে মালয়েশিয়া দলের সিনিয়র কোচ হয়ে ঢাকায় এসেছেন তিনি। ২০০৭ সালে ব্যাডমিন্টনে হাতেখড়ি তার। ২০০৯ সালে জুনিয়র জাতীয় দলের সঙ্গে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত একটি বিশেষ ক্যাম্পে অংশ নিয়েছিলেন ময়নুল। সেই ক্যাম্পে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে র্যাংকিংয়ে সেরা তিনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে নিয়মিত খেলেন। তবে ২০১৪ সালে সিলেটে অনুষ্ঠিত জাতীয় টুর্নামেন্টে ফিকশ্চারে নাম থাকা সত্ত্বেও খেলার সুযোগ পাননি তিনি। বলতে গেলে সেখানেই শেষ হয়ে যায় তার ক্যারিয়ার। সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো বয়ে বেড়ান ময়নুল, ‘ন্যাশনাল টুর্নামেন্ট ছিল ২০১৪-তে, সিলেটে। তখন আমাকে খেলতে দেওয়া হয়নি। আমার নাম ছিল ফিকশ্চারে, আমার সবকিছু ঠিক ছিল, তবে ওনারা (স্থানীয় কর্মকর্তারা) আমাকে খেলতে দেয়নি। কারণ হচ্ছে তখন আমি নিট কনসার্ন ক্লাবের হয়ে খেলতাম। ওনারা বলেছিল আমি কেন ক্লাবে খেলব, আমাকে জেলা থেকে খেলতে হবে। এরপর জেলা থেকে বলা হয়েছিল আমাকে খেলতে দেওয়া হবে, তবে ফিকশ্চারে নাম থাকার পরেও আমাকে খেলতে দেওয়া হয়নি।’ এরপরই খেলা থেকে মন উঠে যায় ময়নুলের। ধীরে ধীরে খেলা থেকে কোচিংয়ে মনোযোগী হয়ে ওঠেন। একটা সময় নিট কনসার্ন ক্লাবের তৎকালীন ম্যানেজার ওহিদুলজ্জামান রাজুর মাধ্যমে ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ার নিউ ভিশন ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমিতে এক মাসের ট্রায়ালে যান ময়নুল। ট্রায়াল শেষে তার দক্ষতায় সন্তুষ্ট হয়ে অ্যাকাডেমিটি তাকে কোচ হিসেবে রেখে দেয়। কোচিং ক্যারিয়ারের মাঝখানে কিছুদিন কাজ করেছেন মরিশাস জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে। এরপর সেখান থেকে ফের ফিরে গেছেন মালয়েশিয়ায়। দেশে খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতে না পারলেও কোচ হিসেবে মালয়েশিয়ার মতো দেশে তার কদর রয়েছে বেশ। নিউ ভিশন ব্যাডমিন্টন ক্লাবের প্রধান কোচ হলেও ঢাকায় এসেছেন মালয়েশিয়া জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে। মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শাটলারদের প্রতিভা আছে তবে তারা ধারাবাহিক ট্রেনিংয়ের সুযোগ পায় না।
মালয়েশিয়ায় ১২ মাস ট্রেনিং হয়, ভালো কোর্ট, ভালো শাটল, ভালো প্রোগ্রাম আছে পার্থক্যটা এখানেই।’ বিদেশে নিজের দক্ষতার ছাপ রেখে চলা ময়নুলের হৃদয়ে আছে দেশের ব্যাডমিন্টন নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা, ‘বাংলাদেশ থেকে ভালো কোনো প্রস্তাব পেলে অবশ্যই কাজ করব। দেশের জন্য কাজ করতে চায় না এমন মানুষ খুব কমই আছে।’ ময়নুল অবশ্য প্রথম নন। এর আগে ব্যাডমিন্টন কোচ হিসেবে কাতারে কাজ করেছেন বাংলাদেশের নিখিল চন্দ্র ধর।