ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কাকরাইলে গণঅনশনে জবি শিক্ষার্থীরা, দাবি আদায় পর্যন্ত চলবে কর্মসূচি

কাকরাইলে গণঅনশনে জবি শিক্ষার্থীরা, দাবি আদায় পর্যন্ত চলবে কর্মসূচি

দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার কাছে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে গণঅনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। অন্তত ৮০ জন শিক্ষার্থী অনশনে বসেছেন।

শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে তাদের অনশন শুরু হয়। কর্মসূচি শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন শিক্ষক সমিতির মুখপাত্র ও ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মোর্শেদ ভূইঁয়া।

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ক্যাম্পাস থেকে এসেছি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে ফিরব না। এই মুহূর্ত থেকে আমাদের গণঅনশন শুরু হলো।’

কাকরাইল মোড় থেকে যমুনার দিকে যেতে সড়কের ডানপাশে পুলিশ ব্যারিকেডের সামনে শিক্ষার্থীদের একাংশ অনশনে বসেছেন। অন্যান্য শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের স্লোগান স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখী কাকরাইল মোড়।

এর আগে বিকেল তিনটায় সমাবেশে জবি ঐক্যের পক্ষ থেকে একই ঘোষণা দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব লিমন। তিনি বলেন, আমাদের আর পেছনে ফেরার জায়গা নেই। বিজয় না নিয়ে আমরা ফিরছি না।

চার দফা দাবিতে কাকরাইল মোড়ে শুক্রবার জুমার নামাজের পর তৃতীয় দিনের মতো সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। সাবেক-বর্তমান মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন সমাবেশে।

তবে এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

এদিকে সংকট সমাধানে ইউজিসির সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতারা। অধ্যাপক মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, আমাদের দাবি আদায় হওয়ার আগ পর্যন্ত অনশন চলবে৷ এছাড়া ইউজিসিতে আমাদের কয়েকজন সহকর্মী শিক্ষক বৈঠকে বসেছেন সেখানের আপডেটও জানানো হবে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে এই সরকারের কীসের এত সমস্যা। এই দাবি আদায় করতে গিয়ে আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনকি সাংবাদিকরাও আহত হয়েছেন। জাতীয় বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছেন। কিন্তু এই সরকারের আমাদের রক্তের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েও তারা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার মেনে নিতে চাইছেন না।

শুক্রবার সকাল থেকে দাবি আদায়ের আন্দোলনে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে সমাবেশে দলে দলে যোগ দেন জবির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন বিভাগের অ্যালামনাই কমিটি ও নানা জায়গায় অবস্থান করা সাবেক জবিয়ানরা সমাবেশে যোগ দেন। তারা বলছেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নে আমরা আপসহীন।

সাবেক জবিয়ানদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে পানি, কেক, কলাসহ নাস্তা সরবরাহ করা হচ্ছে।

ক্যাম্পাস ৫০ বাসে এলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

চলমান আন্দোলনের তৃতীয় দিন শুক্রবার সকাল থেকে ৫০টির মতো বাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাকরাইলের সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।

এদিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত বুধবার বেলা পৌনে ১২টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে রওয়ানা হন। পদযাত্রা প্রথমে গুলিস্তান মাজার গেটে বাধার মুখে পড়েন। পরে মৎস্য ভবনে ফের পুলিশের বাধা অতিক্রম করে যমুনা অভিমুখে এগিয়ে যেতে থাকেন জবি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে যেতেই অতর্কিত টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, গরম পানি নিক্ষেপ করতে শুরু করে পুলিশ। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন। এরপর রাতে আলোচনার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন শিক্ষা উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাসায় দীর্ঘসময় মিটিং করলেও কোনো সমাধান আসেনি।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমরা দিনের পর দিন আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের দাবি মেনে নিতে হবে। হল, আবাসন আমাদের অধিকার।

শিক্ষার্থীদের চার দফা: দাবিগুলো হলো- আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন এবং শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী পুলিশদের বিচারের আওতায় আনা।

কর্মসূচি,গণঅনশন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত