মাতারবাড়ীর উন্নয়নে বৈদেশিক বিনিয়োগ ‘অত্যন্ত জরুরি’: প্রধান উপদেষ্টা

কক্সবাজারের মাতারবাড়ী অঞ্চলকে দেশের বৃহত্তম বন্দর, শিল্প, জ্বালানি ও লজিস্টিকস কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ (এমআইডিআই) নিয়ে আয়োজিত এক পর্যালোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা ইতোমধ্যে এ অঞ্চলে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তাই একটি সুসংহত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন এখন জরুরি।

মাতারবাড়ী ও মহেশখালী অঞ্চলে যৌথভাবে গড়ে তোলা এমআইডিআই প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও জাপানের কৌশলগত একটি অর্থনৈতিক উদ্যোগ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ওই অঞ্চলকে একটি পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক করিডোরে পরিণত করার লক্ষ্য রয়েছে, যেখানে শিল্প, জ্বালানি ও পরিবহন খাতের সমন্বিত উন্নয়ন ঘটবে। সভায় জানানো হয়, মাতারবাড়ীকে জাতীয় সড়ক নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করার পাশাপাশি এমন গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে কনটেইনারবাহী বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মাতারবাড়ী এলাকায় বিপুল সংখ্যক শ্রমিক ও পেশাজীবীর আগমন ঘটবে, তাই তাদের বসবাসের জন্য একটি পরিকল্পিত শহর গড়ে তোলাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও জানান, জাপান মাতারবাড়ীতে তাদের দ্বিতীয় এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন (ইইজেড) গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে, যেখানে সৌদি আরব, আবুধাবি, জাপান, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে।

উল্লেখ্য, মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে ইতোমধ্যে জাপানের দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার চুক্তি করেছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। এ প্রসঙ্গে এমআইডিআই সেলের মহাপরিচালক সরওয়ার আলম প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরেন।

এদিনের সভায় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার রাতেই চার দিনের সরকারি সফরে জাপান যান। সফরে তিনি টোকিওতে নিক্কেই ফিউচার অব এশিয়া সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। সফরের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে এমআইডিআই প্রকল্পে জাপানি অর্থায়ন নিশ্চিত করা।