যন্ত্রপাতি অচল ও দক্ষ জনবল না থাকায় আইসিইউ সেবা দিতে পারছে না চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। মাত্র চার বছর আগে করোনায় যে হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছিল সেটিও আবার ধুঁকছে বিভিন্ন সমস্যায়। এতে বিপাকে পড়ছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা। তবে আশার বিষয়, করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর পর আবারও আইসিইউ শয্যাগুলো সচলের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, হাসপাতালটিতে ১৮ আইসিইউ শয্যাসহ মোট ২২টি ভেন্টিলেটর সুবিধা ছিল। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়।
তখন সেখানে কোনো আইসিইউ শয্যা বা ভেন্টিলেটর সুবিধা ছিল না। পরে ওই মাসেই হাসপাতালটিতে ভেন্টিলেটরসহ ১০টি আইসিইউ শয্যা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২০ সালের জুনে সেগুলো চালু হয়। এরপর ২০২১ সালের এপ্রিলে সেখানে আরও আটটি আইসিইউ শয্যা বরাদ্দ দেওয়া হলে শয্যা সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮টিতে। এছাড়াও যেসব রোগীদের আইসিইউ প্রয়োজন নেই তাদের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল এইচডিইউ। সব মিলিয়ে সেসময় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ২২টি ভেন্টিলেটর সচল ছিল। কিন্তু ৩ বছরের মধ্যে সবগুলোই অচল হয়ে পড়ে। বর্তমানে আটটি শয্যায় রোগী ভর্তি করা গেলেও ভেন্টিলেটর সচল রয়েছে মাত্র একটিতে। সেটিও মাঝেমধ্যে বিকল হয়ে পড়ে। ভেন্টিলেটর মূলত যেসব রোগীর ফুসফুস ঠিকভাবে কাজ করে না, তাদের শ্বাস-প্রশ্বাস চালু রাখতে ব্যবহৃত হয়।
ভেন্টিলেটরের পাশাপাশি এসব আইসিইউ শয্যার অন্যান্য সরঞ্জামাদি যেমন- কার্ডিয়াক মনিটর, ইনফিউশন পাম্প, সাকশন মেশিন, বিভিন্ন সেন্সর ও মনিটরের মধ্যে অনেকগুলোই অচল অবস্থায় রয়েছে। তবে হাসপাতালের মেডিসিন ও আইসিইউ বিশেষজ্ঞ ডা. রাজদ্বীপ বিশ্বাস জানান, জেনারেল হাসপাতালে মোট ২২টি ভেন্টিলেটরের মধ্যে বর্তমানে ৩টি প্রস্তুত আছে। এছাড়া ৩৯টি হাই ফ্লো অক্সিজেন ন্যাজাল ক্যানোলার মধ্যে সচল রয়েছে ৫টি। তবে ১৮টি আইসিইউ বেড পরিচালনায় দক্ষ ও পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও জনবলের অভাব রয়েছে। তিনি আরও বলেন, মেরামতযোগ্য ভেন্টিলেটর ও যন্ত্রপাতির বিষয়ে আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে; কিন্তু এত দিন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এখন করোনা সংক্রমণ বাড়ার পর অন্তত পাঁচটি আইসিইউ শয্যা সচল করার চেষ্টা চলছে। এদিকে জনবল সংকটও রয়েছে হাসপাতালটিতে। ২০২০ সালে করোনা ইউনিটের জন্য যে ২২ জন চিকিৎসক সংযুক্তি পেয়েছিলেন, তাদের সবাইকে চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি একসঙ্গে বদলি করা হয়। এরপর আর কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আকরাম হোসেন জানান, আইসিইউ শয্যাগুলো পরিদর্শন করে দেখা হচ্ছে কোনগুলো সচল করা যায়। মেরামতের জন্য অধিদপ্তর থেকে লোক আসছেন। পাশাপাশি আইসিইউ চালাতে নতুন করে জনবল প্রয়োজন।