সিলেট বিভাগের দরিদ্র-অসহায় পরিবারের ১৫ জোড়া তরুণ-তরুণীর অন্যরকম যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত হলো গত সোমবার। যুক্তরাজ্যভিত্তিক চ্যারিটি সংস্থা আল-খায়ের ফাউন্ডেশন আয়োজন করে এই বিয়ের। নগরীর আমান উল্লাহ কনভেশন হলে স্বজনদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নতুন সংসার সাজাতে বর-কনেকে দেয়া হয়েছে নানা উপহার। এর মধ্যে গৃহস্থালি, খাদ্যসামগ্রী যেমন রয়েছে, তেমনি ছিল নগদ অর্থ, ভ্যানগাড়ি, সেলাই মেশিনসহ আরো বেশকিছু উপহার সামগ্রী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের যুগ্ম সচিব ও এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, এ এক ভিন্ন অনুভূতি। আমাদের অধীনে প্রায় ২ হাজারের অধিক এনজিও রয়েছে। এনজিও’র মাধ্যমে এমন জীবনধর্মী প্রোগ্রাম আজ প্রথম উপভোগ করলাম। তিনি আল খায়ের ফাউন্ডেশনের এ উদ্যোগকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া গ্রামের ফয়জুল হকের পুত্র এনামুল হক জানান, চার বোন ও তিন ভাইয়ের সংসারে তার অবস্থান তৃতীয়। পয়সার অভাবে তার বিয়ে অনেকটা আটকে ছিল। আল খায়ের ফাউন্ডেশন তার বিয়ের কাজটি সহজ করে দিয়েছে। পার্শ্ববর্তী দরগাপুর গ্রামের রামিনা বেগমের সাথে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। নবদম্পতিদের শুভকামনা জানিয়ে আল-খায়ের ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর তারেক মাহমুদ সজীব বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে আল-খায়ের ফাউন্ডেশন প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ জনকল্যাণমূলক কাজ করে যাচ্ছে। ‘যৌতুককে না বলুন’-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০২৩ সাল থেকে অস্বচ্ছল ও হতদরিদ্র পরিবারের বিয়ে উপযুক্ত ছেলে ও মেয়েকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার মাধ্যমে সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ হতে সহায়তা করে চলেছে। গত সোমবার পর্যন্ত ১৫৫ জনকে তারা নতুন জীবনের সন্ধান দিতে সক্ষম হয়েছেন। দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তের মানুষের সহযোগিতায় আনন্দময় এ আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো কয়েকশ গরিব পরিবারকে বিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি। নবদম্পতিদের উপহার হিসেবে একটি ভ্যান, একটি সেলাই মেশিনসহ অন্যান্য উপহার সামগ্রী, নগদ ৫ হাজার টাকা, সাজসজ্জার জন্য পাঞ্জাবি-পায়জামা, শাড়ি ওড়না, গয়নার সেট এবং এক মাসের খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরামুল কবির, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ, আমান উল্যাহ কনভেনশন হলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কুদরত উল্যাহ ফাহের, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আমিরুল ইসলাম চৌধুরী বাবু এবং সিলেট ফটোগ্রাফিক সোসাইটির ফরিদ আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।