নীলফামারীর জলঢাকায় কৃষকদের মাঝে ভুট্টা চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। তিস্তা, বুড়ি তিস্তা নদীর বুকে জেগে উঠা চরসহ বিভিন্ন এলাকায় অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভের আশায় ভুট্টা চাষে স্বপ্ন বুনছেন এই অঞ্চলের চাষীরা।
কৃষকরা বলছেন, তেল, সার, কীটনাশকের দাম বাড়ায় অন্যান্য ফসলের উৎপাদন খরচ বাড়লেও ভুট্টা চাষে খরচ কম হওয়ায় দিনদিন ভুট্টার আবাদ বেড়েই চলেছে। পশু খাদ্য তৈরিতে ভুট্টার পাতা ব্যবহার বেশি হওয়ায় সারা বছর ভুট্টার চাহিদা লেগেই থাকে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনাও রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে অধিক পরিমান জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিসের পরামর্শ ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকরা এবারে ভুট্টা চাষে বেশি ঝুঁকছেন বলে সুত্রে জানা গেছে। ভুট্টা চাষে খরচ কম। ফলন, দাম ও লাভ বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে এ ফসল আবাদেও আগ্রহ বেশি বলে কৃষি অফিস দাবি করেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ উপজেলায় চাষ যোগ্য জমি রয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার হেক্টর। তার মধ্যে ভুট্টা ১ হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া আলু ৩ হাজার ৯৫০ হেক্টর, শাক সবজি ৯৩০ হেক্টর, পেয়াজ ৮৫ হেক্টর, রসুন ৩৫ হেক্টর, মরিচ ৪৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। জলঢাকার বিভিন্ন চরাঞ্চলের ১০ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ৮ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার ফসলের আবাদ করা হয়ে থাকে। এ সব জমিতে বেশির ভাগই চাষ হচ্ছে ভুট্টা। যা সম্প্রতি এ অঞ্চলের ব্র্যান্ডিং পন্য হিসাবে খ্যাতি পেয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা ও জানা যায়, এলাকার চরাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। তিস্তা ও বুড়ি তিস্তা নদীর দুই পাশে এক সময় দেখা যেত শুধু রাশি রাশি রুপালী বালু। সেখানে ফসল উৎপাদনই ছিল চিন্তার বাইরে।
উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক স্বাধীন রায় বলেন, ইরি-বোরো আবাদের চেয়ে ভুট্টা চাষে খরচ কম। ধানের চেয়ে ভুট্টা চাষে অনেক বেশি লাভ হয়। তাই কৃষকদের মাঝে ভুট্টা চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সুমন আহমেদ জানান, এই উপজেলায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ করছেন কৃষকেরা। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কৃষকদের সব সময় সহযোগিতা ও সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কৃষকদের মাঝে সার, বীজসহ কৃষি প্রণোদনাও দেয়া হয়েছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও বাম্পার ফলন হবে।