ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পরিচ্ছন্নকর্মীদের আবাসিক ভবন নির্মাণ নিয়ে অনিশ্চয়তা

পরিচ্ছন্নকর্মীদের আবাসিক ভবন নির্মাণ নিয়ে অনিশ্চয়তা

দাগনভূঞা পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীদের সাত তলা আবাসিক ভবনের নির্মাণ কাজ্ব পেলে চলে যান ঠিকাদার। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল তার কাছে দাবি করেন মোটা অঙ্কের চাঁদা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় একপর্যায়ে ঠিকাদারকে কাজ্ব বন্ধে বাধ্য করা হয় বলে উঠেছে অভিযোগ। এদিকে কাজে বাধা এবং বাধাহীনভাবে কাজের পরিবেশ তৈরিতে উদ্যোগ নিতে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর এলজিইডি ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এছাড়া দাগনভূঞা উপজেলা প্রকৌশলীও এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, দাগনভূঞা সেনা ক্যাম্পের ইনচার্জ ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।

এলজিইডি দাগনভূঞা উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীদের আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় দাগনভূঞা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নার্সারি সড়কে ৫০ শতক জায়গার ওপর পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীদের জ্বন্য একটি সাত তলা আবাসিক ভবন নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় সাত কোটি টাকা। ভবনটিতে ২৪টি ইউনিট ও লিফটসহ রয়েছে আধুনিক সব সুযোগসুবিধা। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ্বটি পান চট্রগ্রামের কনসোনেন্স ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড বিল্ডার্স নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ১১ নভেম্বর ২০২৪ ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। ২০২৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে ভবনটির নির্মাণ কাজ্ব সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।

এদিকে কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কনসোনেন্স ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড বিল্ডার্স এলজিইডি দাগনভূঞা উপজেলা কার্যালয়ের মাধ্যমে সাইট বুঝে নেন। এরপর শ্রমিকদের থাকার জ্বন্য লেবার শেড নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল কাজে বাধা দেন এবং মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। একপর্যায়ে ভয়ে ঠিকাদার কাজে পেলে রেখে চলে যান। কাজ্ব বন্ধের বিষয়টি ঠিকাদার গত বছরের ২২ ডিসেম্বর এলজিইডি ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কনসোনেন্স ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী হারুনুর রশিদ বলেন, কার্যাদেশ পাওয়ার পর আমরা উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে নির্মাণ কাজের সাইট বুঝে নিয়ে কাজ্ব শুরুর উদ্যোগ নিই এবং সাইটে লেবার শেড নির্মাণের জ্বন্য লোক নিয়োগ দিই। লেবার শেড নির্মাণের শেষ পর্যায়ে স্থানীয় কিছু লোক কাজে বাধা দেন এবং শেডের টিন খুলে নিয়ে যেতে বলেন। পরে আমরা কাজ্ব বন্ধ করে সাইট থেকে লোকজ্বন নিয়ে আসি। তিনি জানান, বিষয়টি তিনি এলজিইডি ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। কারা বাধা দিয়েছেন, কেন দিয়েছেন, জানতে চাইলে তিনি কারো নাম বলতে অপরাগতা জানান। তবে সঙ্গত কারণে ঘটনার বিস্তারিত তিনি তার লিখিত অভিযোগে তুলে ধরতে না পারলেও মৌখিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করিয়েছেন বলে জানান। তিনি কাজ্বটি আদৌ করতে পারেন কীনা এ নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন। দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এ ব্যাপারে দাগনভূঞা পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ও উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির (বিআরডিবি) চেয়ারম্যান নজির আহম্মদ বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজ্বনক। উন্নয়ন কাজ্ব বাধাগ্রস্ত হলে পৌরসভারই ক্ষতি। কাজ্বটি যেন হয়, এ নিয়ে তিনিও প্রচেষ্টা চালাবেন বলে জানান। এলজিইডি দাগনভূঞা উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ জানান, দাগনভূঞা পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীদের আবাসিক ভবন নির্মাণ কাজে বাধা প্রদানের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তারা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। সেখানে ঠিকাদার কারো নাম উল্লেখ না করে নির্মাণ কাজে স্থানীয় কিছু লোকজ্বনের বাধা দেয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। বিষয়টি তিনি দাগনভূঞা পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার, দাগনভূঞা সেনা ক্যাম্পের ইনচার্জ্ব, দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং এলজিইডি ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলীকে গত ২১ জানুয়ারি চিঠি দিয়ে অবহিত করেছেন বলে জানান। দাগনভূঞা পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের এ ঘটনায় পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার স ম আজ্বহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে শিগগিরই ব্যবস্থা নেবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত