চাঁদপুরের হাজী মোজাম্মেল হোসেন প্রবাস জীবন শেষ করে এখন সফল খামারি। তিনি জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ ও প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা অর্জন করে দুই শতাধিক গরু ও মহিষ নিয়ে এ উপজেলার প্রতিষ্ঠিত শেষ্ঠ খামারি হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের ভাটেরহদ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত এই মোস্তাকিম ডেইরি ফার্ম অ্যান্ড এগ্রো’ আদর্শ খামারে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে দুই শতাধিক গরু ও মহিষ। এক সময়কার জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ এবং প্রবাসী ছিলেন, হাজী মোজাম্মেল হোসেন। তবে ছোটবেলা থেকেই তার শখ ছিল পশুপালন। সেই শখ থেকেই চার বছর আগে শুরু করেন গরু পালন। গড়ে তোলেন নিজের ছেলের নামে ‘মোস্তাকিম ডেইরি ফার্ম অ্যান্ড এগ্রো’। বর্তমানে এটি উপজেলার অন্যতম বড় গরুর খামার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। রূপসা উত্তর ইউনিয়নের ভাটেরহদ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত এই খামারে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে দুই শতাধিক গরু ও মহিষ। এসব পশুর বাজারমূল্য শুরু হয়েছে ৯০ হাজার টাকা থেকে, যার মধ্যে কিছু গরুর দাম ১০ লাখ টাকাও ছাড়িয়েছে। খামারে বিশুদ্ধ খাবারের নিশ্চয়তা দিতে ১৫/১৬ একর জমিতে চাষ করা হচ্ছে বিভিন্ন জাতের ঘাস। ঘাস পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয় ঘোড়ার গাড়ি। গরু গুলোর খাদ্যতালিকায় রয়েছে নিজস্ব চাষকৃত ঘাস, খড়, গমের ভূষি, লবণ, খৈল ও ছোলার ভুষি। কোনোরূপ কেমিক্যাল বা কৃত্রিম মোটাতাজাকরণ ব্যবহার করা হয় না।
খামারের শ্রমিক ইমন হোসেন, আশরাফুল ও সিরাজুল ইসলাম জানান, খামারে গরু গুলোকে নিজেদের চাষকৃত ঘাস, খড়, গমের ভুষি, লবণ, খৈল ও ছোলার ভুষি খাওয়ানো হয়। প্রাকৃতিক পরিবেশে আদর-যত্ন করে লালন-পালন করা হচ্ছে। এজন্যই এগুলো সুস্থ এবং আকর্ষণীয়। গরুর জন্য খাবার সংগ্রহ করতে ঘোড়ার গাড়ি বাহন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
খামার পরিদর্শনে এসে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও রাজনীতিক মো. বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে প্রবাস জীবন, এরপর জনপ্রতিনিধি এবং এখন একজন আদর্শ কৃষক হাজী মোজাম্মেল যেখানে হাত দেন, সেখানেই সাফল্য পাচ্ছেন এবং সোনা ফলছে।
হাজী মোজাম্মেল বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি নিষ্ঠার সঙ্গে। খামারটি শুরু করি মূলত খাঁটি দুধ আর আমিষের চাহিদা মেটাতে। ঈদে নয়, সারাবছরই এখানে গরু বিক্রি করা হয়। বর্তমানে এই খামার থেকে ১৫ জন যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে, যা আমার জন্য গর্ব করার মত বিষয়। ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রাণসম্পদ কর্মকর্তা সুমন ভৌমিক বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান হাজী মোজাম্মেল এখন একজন সফল খামারি। প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে তাকে নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তাকে দেখে অনেক তরুণ গরু পালন গরুর খামার করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এতে উপজেলার কোরবানির পশুর ঘাটতি দ্রুতই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।