ঢাকা রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

নকলায় ইমামের রাজকীয় বিদায়

নকলায় ইমামের রাজকীয় বিদায়

শেরপুরের নকলায় দীর্ঘ ২৫ বছর নিষ্ঠা, সততা ও নিঃস্বার্থভাবে ইমামতি করে আসা ক্বারী আব্দুল খালেক নামে এক মসজিদের খতিব ও ইমামকে রাজকীয় বিদায় দিয়েছেন এলাকাবাসী। উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের জানকিপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের এই খতিব ও ইমামকে গত শুক্রবার বিকালে রাজকীয় বিদায় দেওয়া হয়। তিনি সংশ্লিষ্ট এলাকার একজন পথপ্রদর্শক, সু-পরামর্শদাতা তথা একজন অভিভাবক হিসেবে সবার প্রিয় ছিলেন।

ধর্মীয় আনুগত্যে বিশ্বাসী নিভৃত পল্লী এলাকার একটি মসজিদের দুই যুগের বেশি সময় ইমামতি শেষে আলহাজ্ব ক্বারী আব্দুল খালেক অবসরকালীন রাজকীয় বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছেন গ্রামবাসী। বিদায়বেলায় ইমামকে ফুল ছিটিয়ে এবং সম্মাননা ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধনা দেন তারা। এছাড়া এককালীন পেনশন হিসেবে তুলে দেওয়া হয় নগদ অর্থ। পরে ফুল দিয়ে সাজানো প্রাইভেট কারে করে তাকে পৌঁছে দেওয়া হয় নিজ বাড়িতে। গাড়ি বহরের সঙ্গে সঙ্গী হয়েছিল প্রায় অর্ধশত মোটরসাইকেল। এ উপলক্ষে গত শুক্রবার বিকালে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মসজিদ প্রাঙ্গণে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জানকিপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মো. মোকছেদুল হক শিবলু এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ৯ নং চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শামীম ফরাজী ও ইউনিয়ন য্দুলের আহ্বায়ক মো. আকরাম হোসেনসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন। ইমামের ব্যতিক্রমী এই রাজকীয় বিদায় অনুষ্ঠানটি একনজর দেখতে মসজিদের সামনে ভিড় করেন সব বয়স ও শ্রেণিপেশার গ্রামবাসী এবং পর্দার আড়ালে জড়ো হন মহল্লার অগণিত নারী। নিজেদের মহল্লার ইমাম ও খতিবকে এমন বিদায় জানাতে পেরে খুশি গ্রামবাসী। গ্রামের মানুষ তাদের প্রিয় ইমামকে নানান ধরনের উপহার দিয়েও তাকে বিদায় জানান। ইমামের দীর্ঘ দিনের স্মৃতি তাদের হৃদয়কে ব্যথিত করবে বলেও জানান তারা। বিদায়ী ইমাম ক্বারী আব্দুল খালেক বলেন, আমার দীর্ঘ ২৫ বছরের ইমামতি জীবনে গ্রামের হাজারো মানুষের জানাজা পড়িয়েছি আমি। অগণিত শিশু-কিশোরকে কোরআন শিক্ষা দিয়েছি।

আল্লাহর রহমতে এমন ভালো কাজগুলো করতে পেরে আমি শুকরিয়া আদায় করছি। আমার বিদায়বেলায় এলাকার মানুষ এত বড় আয়োজন করেছেন, আমাকে এতো সম্মান দিয়েছেন এজন্য এলাকার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। দীর্ঘ ইমামতি পেশায় থাকাকালীন এলাকায় ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি অসংখ্য মানুষকে কোরআনের শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি জানাজা পড়িয়েছেন হাজারো মরহুম ব্যক্তির। বিদায়ী সফর সঙ্গী হয়ে এই গ্রামের মানুষ ইমামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন। এমন ব্যতিক্রমী বিদায়ে এলাকাবাসীর ভালোবাসার কাছে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন ইমাম আলহাজ্ব ক্বারী আব্দুল খালেক। ভালো এবং জানাশোনা একজন ইমামকে বিদায় জানাতে গিয়ে আবেগাপ্লুত পুরো গ্রামবাসী।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত