এক দেশ থেকে অন্য দেশে বৈধভাবে যেতে পাসপোর্ট, ভিসা থাকা পরিহার্য একটি শর্ত। যদি বলি এর কোনটি ছাড়া আপনি ঘুরে আসতে পারবেন সবুজের ক্যানভাস খ্যাত নিউজিল্যান্ড থেকে। কী অবাক শোনাচ্ছে, সত্যি পারবেন। তবে সেটি কোনো দেশ নয়, পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির একটি এলাকার নাম নিউজিল্যান্ড।
খাগড়াছড়ি শহর থেকে মাত্র ৫ মিনিটের দূরত্বে আপনি পৌছে যাবেন নিউজিল্যান্ডে। বিমান নয় অটোরিকশা, সাইকেল, মোটরসাইকেল কিংবা অন্যান্য যানবাহনে চড়ে ঘুরে আসা যায়। অনেকে পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়ান এখানে। নিউজিল্যান্ড এলাকা হলো খাগড়াছড়ি সদরের পানখাইয়া পাড়া গ্রামের একটি সড়ক। মূলত পানখাইয়াপাড়া থেকে ধান ক্ষেতের মাঝ দিয়ে আপার পেরাছড়া ও মহিলা কলেজ এলাকাকে সংযুক্ত করতে নির্মিত একটি সড়কের পর পাল্টে যায় এ দৃশ্যপট। ধান ক্ষেতের মাঝখানের সড়ক থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর মনোরম দৃশ্য আকর্ষণ করে যে কাউকে। এ ছাড়া এ সড়ক থেকে দূরের আলুটিলা পাহাড়ের গা বেয়ে মেঘ, রৌদ্রের ভেসে চলে অন্যরকম এক আবহ সৃষ্টি করে। তাই প্রতিদিন এ দৃশ্য দেখতে নানা বয়সী লোকজন ছুটে যান এখানে।
সরেজমিনে নিউজিল্যান্ড পাড়ায় গিয়ে কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। প্রকৃতি চৌধুরী নামে একজন বলেন, নিউজিল্যান্ড থেকে আলুটিলার ভিউ ও সবুজের সমারোহ দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। সময় পেলে তাই ছুটে আসি। মন ভরে শ্বাস ও চোখের তৃপ্তি মেটাতে।
কাঞ্চন দাশ নামে একজন বলেন, দিদির বাসায় বেড়াতে এসে নিউজিল্যান্ড নাম শুনে দেখতে এলাম। নামের মতো সত্যকারভাবে সুন্দর এ প্রকৃতির লীলাভূমি।
বিকালে হাঁটতে আসা রতন দে নামে একজন বলেন, একসময় ভাঙা সড়কের কারণে কেউ আসতো না। গত বছর পৌরসভা থেকে সড়ক সংস্কারের পর এখন আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে এ জনপদ। মানুষজন এখানে এসে শান্তি অনুভব করেন তা দেখে ভালো লাগে।
আবারও কখনও কখনও দেখি উঠতি বয়সী কিছু তরুণ বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালায় এতে করে পথচারী ও দশর্ণার্থীরা ঝুঁকিতে পড়েন। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতনতা ও প্রশাসনের নজরদারী প্রয়োজন।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা বলেন, পরিকল্পিতভাবে নিউজিল্যান্ড সড়ককে শহরবাসী ও পর্যটকদের জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে।
সম্প্রতি এ সড়কে সৌন্দর্যবর্ধন বৃক্ষ রোপণ করার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এসব বৃক্ষ যদি বড়ে হয়ে গাছে পরিণত হয় এ সড়কের সৌন্দর্য আরও বাড়বে।