ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯ বছর পর সিজারিয়ান কার্যক্রম শুরু

পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯ বছর পর সিজারিয়ান কার্যক্রম শুরু

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০১৫ সালে অস্ত্রোপচারের (সিজার) মাধ্যমে সন্তান জন্ম হয়েছিল। সফল অস্ত্রোপচার হলেও সে সময় একটি অজ্ঞাত কারণে বন্ধ হয়ে যায় সিজার কার্যক্রম। এরপর ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারের বিষয়ে আস্থা হারিয়ে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে বেসরকারি ক্লিনিকের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে পীরগঞ্জ উপজেলাবাসী।

এরমধ্যে কেটে গেছে ৯ বছর। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল আহমেদের প্রচেষ্টায় আবারও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম হয়েছে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। নবজাতক ও মা দুজনই সুস্থ আছেন। এতে খুশি ওই নবজাতকের পরিবারের সদস্য ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি দীর্ঘদিন পর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নবজাতক জন্মের ঘটনায় এলাকায় হাসপাতালটির প্রতি আস্থা ফিরেছে।

নবজাতকের বাবা নাহিদ হাসান বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাকে বারবার অভয় দিয়েছেন। তাদের আশ্বাস পেয়ে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই স্ত্রীর অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। চিকিৎসকদের সেবায় তিনি খুশি। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে শেষ অস্ত্রোপচার হয়। এরপর থেকে প্রায় ৯ বছর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আর কোনো নবজাতকের জন্ম হয়নি। গত মঙ্গলবার বিকালে পীরগঞ্জ উপজেলার জগথা গ্রামের নাহিদ হাসানের সন্তানসম্ভবা স্ত্রী আখি আক্তারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সিজার কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। গতকাল বুধবার সকালে সফল অস্ত্রোপচার করা হয়।

হাসপাতালের গাইনি কনসালট্যান্ট ডা. এম আর রেজা, ডা. কামাল আহমেদ অস্ত্রোপচারে অংশ নেন। এছাড়া জ্যেষ্ঠ নার্স নাজমা বেগম, পারভিন আক্তার ও কামরুন নাহার অপারেশন থিয়েটারে উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল আহমেদ বলেন, ‘হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার, গাইনির চিকিৎসক, অ্যানেসথেসিয়ার চিকিৎসক, কনসালট্যান্টসহ সব সুবিধা রয়েছে। তারপরেও কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগ সাজেসে এই হাসপাতালে সিজার কার্যক্রম বন্ধ করে রেখেছিল। বাড়ির কাছের হাসপাতাল ছেড়ে সিজারের জন্য দূরের হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিক নির্ধারণ করতেন। এ সুযোগে সেবাপ্রার্থীদের বুঝিয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হতো। তবে গতকাল এক রোগীর অভিভাবক আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন, যার ফলে সফল অস্ত্রোপচার করা সম্ভব রয়েছে।’

ডা. কামাল আহমেদ আরও জানান, হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ রাখতে বিদ্যুৎ বিভাগকে আগেই অবহিত করা হয়েছিল। তারাও এতে সমর্থন দিয়ে আশ্বস্ত করেছে। তবে সিজারের অস্ত্রোপচার বিদ্যুৎ ছাড়া দিনের আলো কিংবা টর্চের আলোতেও সফলভাবে করা সম্ভব। এতে কোনো ঝুঁকির বিষয় নেই বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত