
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় দেখা দিয়েছে গুরুতর প্রশাসনিক সংকট। এতে প্রশাসনিক জটিলতাসহ শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। তাই দ্রুত সময়ে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ পুরণ করে জটিলতা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোরালো দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর এলাকার ১১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭০টিরও বেশি বিদ্যালয়ে ২০১৮ সাল থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য পদযুক্ত এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- হোগলাকান্দি, চর হাজিপুর, বীর হাজিপুর, ধলাপাতা, তারাপাশা, হারেঞ্জা, ধনকুড়া, মধ্য গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় ৪৫টি বিদ্যালয় বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। অপরদিকে, হোসেনপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধুলিহর, গড় মাছুয়া, কাওনা, কুড়িমারা, দক্ষিণ পিপলাকান্দি, বিল চাতল, বীর পাইকশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় ২৫টি প্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষকরা চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। ভারপ্রাপ্ত ও চলতি দায়িত্বে বিদ্যালয় পরিচালিত হওয়ায় ব্যবস্থাপনা, শিক্ষার গুণগত মান এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকায় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্তদের পূর্ণাঙ্গ প্রধান শিক্ষক হিসেবে মানতে অনাগ্রহী। পাশাপাশি অতিরিক্ত প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের কারণে শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষের পাঠদানে প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারছেন না। একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থায়ী প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও তদারকি দুর্বল হয়ে পড়েছে। নিয়মিত অভিভাবক সভা, শিক্ষার মানোন্নয়ন কার্যক্রম এবং শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ব্যাহত হচ্ছে।’ শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি ও নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। দ্রুত স্থায়ী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না দিলে প্রাথমিক শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে হোসেনপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. এমদাদুল হক খান বলেন, ‘শূন্য পদের চাহিদা আমরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে মহাপরিচালক (ডিজি) মহোদয়ের কাছে পাঠিয়ে আসছি। কিছু ক্ষেত্রে চলতি দায়িত্বে নিয়োজিতদের মামলা থাকায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শূন্য পদগুলো পূরণ করা সম্ভব হবে।