ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

‘৭২-এর সংবিধান আমাদের চেতনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না’

‘৭২-এর সংবিধান আমাদের চেতনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন যারা সংবিধান রচনা করেছিলেন তারা পাকিস্তান গণপরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল গণভোটের। তারা সেটাও করেননি। যাত্রাই শুরু করেছি আমরা অবৈধভাবে। সুতরাং সেই সংবিধান কীভাবে বৈধ হতে পারে? তাই ৭২-এর সংবিধান অবৈধ সংবিধান। ৭২-এর সংবিধান আমাদের চেতনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। সংবিধান রচনা করতে হবে এদেশের মানুষের চিন্তা চেতনা ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ সংবিধান প্রণয়ন করা নয়। তবে নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম সংস্কার করতে হবে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে। এমন কিছু মৌলিক সংস্কার করে নির্বাচন করতে হবে। গতকাল শনিবার শরীয়তপুর পৌরসভা মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যেখানে কখনোই স্বাধীনতা পরিপূর্ণতা পায়নি। ১৯৪৭-এর স্বাধীনতা পরিপূর্ণ হয়নি, ১৯৭১-এ সংগ্রাম করতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে পৃথিবীর বুকে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সেই স্বাধীনতা পূর্ণতা অর্জন করেনি। এরপর ২০২৪-এর স্বাধীনতা বা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। এর কারণ, আমরা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অযোগ্য নেতৃত্ব পেয়েছিলাম।

তিনি আরো বলেন, গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের অংশ হিসেবে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু ভুল নেতৃত্বের কারণে আমরা দেখলাম, গণতন্ত্র হত্যা করে তারা বাকশাল কায়েম করল। বাকশালের পরিণতি যে কি হয়েছিল তা এদেশের মানুষ দেখেছে। শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে, জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে, আন্দোলনের মুখে এরশাদের পতন হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে আমরা জেল জুলুমের শিকার হয়েছি, তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে বলেছি, আল্লাহর কাছে হাসিনার পদত্যাগ চেয়েছি। কিন্তু আল্লাহ আমাদের ধৈর্য্যর ফল হিসেবে শুধু পদত্যাগ না দেশত্যাগ করিয়েছেন।

তিনি বলেন, এখন অনেকে বলে, এবার জামায়াতকে ক্ষমতায় আনব। আমরা চেয়েছি পদত্যাগ, কিন্তু আল্লাহ মিরাকেল দেখিয়ে করিয়েছেন দেশত্যাগ। এখন যদি সবাই বলে একবার জামায়াতকে দেখব। আল্লাহর মিরাকেলে জামায়াত ক্ষমতায় যেতেও পারে ইনশাআল্লাহ। কেননা বাকশাল শেষ, ৬ দফা শেষ, ১৮ দফা পারে নাই, ১৯ দফা পারে নাই। সোনার বাংলা, সবুজ বাংলার স্লোগান বাংলার মানুষের কোনো ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারে নাই। এবারের দফা এক দফা। সেই দফা হলো আল্লাহর আইনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য একবার জামায়াতে ইসলামীকে ক্ষমতায় বসানো।

শরীয়তপুর জেলা জামায়াতের শুরা সদস্য ও ডামুড্যা পৌরসভা আমির আতিকুর রহমান কবীর এবং জেলা শুরা সদস্য মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের পরিচালনায় জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুর রব হাশেমীর সভাপতিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম খান মিলন, শরীয়তপুর-১ আসনে জামায়াতের মনোনিত প্রার্থী ড. মোশারফ হোসেন মাসুদ, শরীয়তপুর-২ আসনে জামায়াতের মনোনিত প্রার্থী অধ্যাপক মো. মাহমুদ হোসেন, শরীয়তপুর-৩ আসনে জামায়াতের মনোনিত প্রার্থী মো. আজহারুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির একেএম মকবুল হোসাইনসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত