গত কয়েকদিন ধরেই রংপুর গত কয়েকদিন ধরেই রংপুর অঞ্চলে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। তপ্ত আবহাওয়ার কারণে বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি ঈদে বাড়ি আসা মানুষ। প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ মানুষ কোন আত্মীয়স্বজনের সঙ্গেও দেখা করতে যাননি। এক প্রকার ঘরবন্দি অবস্থায় দিন কাটছে তাদের। আশপাশের এলাকায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। তপ্ত আবহাওয়ার কারণে বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি ঈদে বাড়ি আসা মানুষ। টানা দশ দিনের ঈদের ছুটি কাটাতে নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়িতে এসেছেন অনেকে। কিন্তু ঈদের ছুটির সাথে সাথে উত্তরের এই জনপদে চলছে তাপদাহ।
শিশু ও প্রবীণদের তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষরা। না তারা ঘরে স্বস্তি পাচ্ছেন। না তারা বাইরে বেরুতে পারছেন। প্রচণ্ড গরমে আত্মীয়স্বজনের সাথে দেখা করার কথা ভাবতেও পারছেন না। ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার জান্নাত জ্যোতি। ঈদুল আজহার দুইদিন আগে ৮ ঘণ্টার রাস্তা ২২ ঘণ্টায় পাড়ি দিয়ে রংপুর নগরীর শাহীপাড়ায় নিজ বাড়িতে এসেছেন। ভেবেছিলেন ঈদের ছুটি ভালোভাবে কাটিয়ে চাকরিতে যোগ দিবেন। কিন্তু তার ঈদ উদ্যাপনের বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রচণ্ড তাপদাহ। মাহফুজা শারমিনও ঈদ করতে এসেছেন ৬ বছরের মেয়েকে নিয়ে। প্রচণ্ড গরমের কারণে কোথাও বের হতে পারেননি। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে দুইদিন ধরে তার মেয়ে জ্বরে আক্রান্তু। তাদের মত অনেকেই ঈদ উদ্যাপন করতে এসে তাপদাহের কারণে বিপাকে পড়েছেন। গরমের কারণে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারছেন না।
গত কয়েকদিন ধরেই রংপুর এবং এর আশপাশের এলাকায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। তপ্ত আবহাওয়ার কারণে বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি ঈদে বাড়ি আসা মানুষ। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ মানুষ কোন আত্মীয়স্বজনের সাথেও দেখা করতে যাননি। এক প্রকার ঘরবন্দি অবস্থায় দিন কাটছে তাদের। আবহাওয়া অফিস জানায়, রংপুর ও আশপাশের এলাকায় কয়েকদিন থেকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। আকাশে মেঘের কোন ছিটেফোঁটা নেই। সূর্যের কিরণ সরাসরি ভূপৃষ্ঠের ওপর পড়ায় ভূপৃষ্ঠ খুব তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এদিকে প্রচণ্ড গরমের কারণে প্রায় ঘরেই জ্বর, সর্দিসহ বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দিয়েছে। প্রাণী জগতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। হাস-মুরগির খামারিরা তাদের পশুর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতেও হিমশিম খাচ্ছেন। তপ্ত রোদের কারণে রাস্তা-ঘাট প্রায় ফাঁকা। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হন না। আজ শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায় সড়কগুলো খাঁ-খাঁ করছে। লোকজন নেই বললেই চলে। দু’একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাও বা খুলেছে তাও ক্রেতা শূন্য। নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে একটি পুকুরে কিশোর-যুবক এবং বয়স্ক বেশ কয়েকজন সাঁতার কাটছে। স্থানীয় বাসিন্দা জালাল মিয়া বলেন, গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পুকুরে ডুব দিয়ে সবাই একটু শীতল পরশ নেয়ার চেষ্টা করছেন। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় রংপুরে তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বেলা ৩ টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বুধবার ছিল ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, দুই একদিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পাবে। গতকাল শুক্রবার বিকালে রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার সাহিন সুলতানা জানান প্রচণ্ড গরমের কারণে জ্বর, সর্দিসহ বিভিন্ন রোগবালাই দেখা দিয়েছে। তিনি ছায়াযুক্তস্থানে চলাচল করার পরামর্শ দেন। তিনি বেশি বেশি ঠান্ডা পানি পান করার পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি আরও বলেন, এসময় ঘরে ঘরেই জ্বর দেখা দিতে পারে।