ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জাতীয় নাগরিক পার্টির রাজনৈতিক দর্শন পাইনি

বললেন রিজভী
জাতীয় নাগরিক পার্টির রাজনৈতিক দর্শন পাইনি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সবাই অনেক ভালো ভালো কথা বললেও রাষ্ট্র সম্পর্কে কোনো পলিটিক্যাল ফিলোসফি (রাজনৈতিক দর্শন) পাননি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। গতকাল শনিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে (আইডিইবি) ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (এনআরএফ) আয়োজনে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ত্যাগ ও নেতৃত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ‘নন্দিত নেত্রী খালেদা জিয়া’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করে রুহুল কবীর রিজভী বলেন, আজকে দুয়েকজন বুদ্ধিজীবী বলেছেন, ক্ষমতায় থেকেই তো বিএনপির জন্ম হয়েছে। ওনারা ভুলে গেছেন, ওনারা রাজনীতিতে একটা নতুন ন্যারেটিভ তৈরি করছেন। এরশাদ ও জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আসতে চাচ্ছে। কিন্তু এটা যে ঠিক নয়, জিয়া যে অন্যমাত্রার, অন্যকিছু, জিয়া যে একটি নতুন দর্শন দিয়েছেন- আজকে অনেকে দল করছেন। আমি গত (শুক্রবার) নতুন যারা দল করেছেন তাদের ওখানে উপস্থিত ছিলাম। তারা অনেক ভালো ভালো কথা বলেছেন রাষ্ট্র সম্পর্কে। কিন্তু পলিটিক্যাল ফিলোসফি কিন্তু আমি পাইনি।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, শেখ মুজিবুর যেমনই হোক, সে সময় সে বাংলা জাতীয়তাবাদকে পশ্চিমের পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে বাঙালি স্বায়ত্তশাসনের একটি ন্যারেটিভ তৈরি করেছিলেন। স্বাধীনতার পর তো আমরা ভূখণ্ড পেয়ে গেলাম, এর জন্য যে রাজনৈতিক দর্শন সেটা জিয়াউর রহমান দিয়েছেন। এই জন্য জিয়াউর অন্যদের চেয়ে ভিন্ন। জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসনব্যবস্থা হত্যা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রে উত্তরণ করেছেন উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, এটা যে কোনও একজন গণতান্ত্রিক মানুষকে করতে হতো, এটা জিয়াউর রহমান করেছেন। জিয়াউর রহমান কোনও গণতান্ত্রিক শাসক উৎখাত করে ক্ষমতায় আসেননি। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে শেখ মুজিব বাকশাল করে। সেখানে বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্ম দিয়েছেন জিয়াউর রহমান।

রিজভী বলেন, এতগুলো টেলিভিশন, আমরা যে খবরের কাগজ পড়ছি, গণতন্ত্রে বহুমতের যে একটা জায়গা আছে, সহিষ্ণুতার যে জায়গা আছে, এটা কে সৃষ্টি করেছে? বাকশালের অন্ধকার গোহা থেকে গণতন্ত্রের আলোর মশাল জ্বালিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। যেসব বুদ্ধিজীবী বলেন, বিএনপিও তো ক্ষমতায় থেকে তৈরি, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে তৈরি বা বিএনপির জন্মের সঙ্গে অন্য দলের জন্মের হাজার পার্থক্য আছে। কারণ বিএনপি এমন একটি আলোচিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি করেছে বলেই আবার যখন গণতন্ত্র সংকটের মুখে পড়েছে, বেগম খালেদা জিয়া আবার গণতন্ত্রের মশাল জ্বালিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র বিজয় করেছিলেন ৯০ দশকে।

তিনি বলেন, ২০০৬ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত যে প্রেরণায় আমরা জেল খেটেছি, দিনের পর দিন রিমান্ডে গেছি, আমাদের সালাহউদ্দিন আহমেদ (স্থায়ী কমিটির সদস্য) ২ মাস অন্ধকার কুঠুরিতে থেকেছেন, যেখানে দিন না রাত বোঝা যায় না। এত যে নির্যাতন সহ্য করা, এটা কার প্রেরণায়? এটা বেগম খালেদা জিয়ার প্রেরণায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক ড. আনোরুল্লাহ চৌধরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহম্মেদ, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, প্রফেসর ড. তাজমেরী এস এ ইসলাম, ছাত্র সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন রুনু, ভারপ্রাপ্ত চেয়্যারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসিম, সহ-স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজেড সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত