বাংলার প্রকৃতিতে বসন্তের আরম্ভ ঘটেছে, আর মাঘের মাঝামাঝিতেই গাছে গাছে ফুটতে শুরু করেছে ফলের রাজা আমের মুকুল। সাতক্ষীরা এখন আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ছেয়ে গেছে। আমের মুকুলের মৌ মৌ ঘ্রাণে মুখরিত এখন গোটা সাতক্ষীরা।
শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র আমগাছগুলো সোনালি সাজে সেজেছে মুকুল নিয়ে। এবছর জেলার আম চাষিদের কাছে আমের ব্যাপক উৎপাদনের আশা রয়েছে। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, ৯০ হাজার টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এবছর প্রত্যেক আম গাছেই দারুণভাবে মুকুল এসেছে।
আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে তাহলে এই বছর সাতক্ষীরায় আমের আশাব্যঞ্জক ফলন হবে আশা করছে চাষীরা। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এখানে ৫ হাজার আমবাগান রয়েছে, যেখানে ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এবারের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন। গত বছর জেলার বেশিরভাগ আম বাগানে মুকুল কম ছিল, কিন্তু এবছর সেটা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মুকুলের এই উল্লসিত উপস্থিতি জেলার ১৫ হাজার আম চাষির স্বপ্নকে নতুন করে উজ্জীবিত করেছে। এজন্য তারা বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবছর ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্য রাখা হয়েছে, যার বাজার মূল্য গড় হিসেবে ৬০ টাকা কেজি ধরে প্রায় ৩৬০ কোটি টাকা। মুকুলকে রক্ষা করতে এবার বাগানে ব্যস্ততাও দেখা যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের বিভিন্ন উপদেশ গ্রহণ করছেন চাষিরা। স্থানীয়রা জানান, বছরের এই সময়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুর কারণে সাতক্ষীরায় আগাম মুকুল আসে। ফলে সাতক্ষীরার আম রাজশাহী অঞ্চলের আমের আগে পেকে যায় এবং স্বাদের দিক থেকে এটি যথেষ্ট জনপ্রিয়। আম চাষি আইয়ুব হোসেন, আনোয়ারুল ইসলামসহ অন্যান্য চাষিরা জানান, মুকুল আসার পূর্বে গাছের পরিচর্যা করা হয়। এরইমধ্যে তারা মুকুল সংরক্ষণে স্প্রে এবং সেচ দিচ্ছেন। এছাড়া মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে তারা আশা করছেন, এবছর ভালো ফলন হবে। সাতক্ষীরার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম জানান, এবছর ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হচ্ছে, যার লক্ষ্যমাত্রা ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন। তবে, মুকুলের জন্য কিছু পোকা আক্রমণ করবে এবং সঠিক সেচ পদ্ধতি অনুসরণ না করলে মুকুল শুকিয়ে যেতে পারে। এজন্য কৃষি অফিস থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের আয়োজন করা হয়েছে।