ঈদকে সামনে রেখে সাতক্ষীরা জেলার খামারিরা শেষ মুহূর্তে পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। গমের ভূষি, ভুট্টা, পালিশ, সয়াবিন খৈল এবং নিজেদের চাষ করা ঘাসসহ অর্গানিক খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করছেন তারা। তবে, জেলায় গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া সব মিলিয়ে প্রস্তুত রয়েছে ১লাখ ৬০৬টি পশু আর চাহিদা রয়েছে ৮৫ হাজার ৩১৮টি পশু। এদিকে, চাহিদার তুলনায় যোগান বেশি থাকায় কাঙ্ক্ষিত আয় নিয়ে রয়েছে অনেকের মনে শঙ্কা। সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার সাত উপজেলায় খামারির সংখ্যা ১২ হাজার ৮৯৪। এসব খামারে ৪৯ হাজার ১৯৯টি, ১হাজার ১৮২টি মহিষ, ৪৪হাজার ৫৪টি ছাগল, ৬ হাজার ১৫৬টি ভেড়া এবং অন্যান্য ১০টিসহ ১ লাখ ৬০৬টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এ বছর জেলায় কোরবারি হতে পারে ৪২হাজার ৩৫২টি গরু, ৬১৬টি মহিষ, ৩৮হাজার ৮৫০টি ছাগল এবং ৩হাজার ৫০০টি ভেড়াসহ মোট ৮৫হাজার ৩১৮টি। সেই হিসাবে ১৫ হাজার ২৮৮টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।
খামারিরা জানান, বাজারে পশুখাদ্য এবং পশু পরিচর্যা ব্যয় বৃদ্ধি পেলেও আশানুরূপ দাম পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী খামারিরা। তবে, ২৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নৌ ও স্থল সীমান্ত বেষ্টিত সাতক্ষীরা জেলায় শঙ্কা ভারতীয় গরুর পাচার নিয়ে। খামারিরা জানান, গত বছর খাবারের মূল্য কম থাকায় আমরা লাভবান হয়েছিলাম। এবার খাবারের দাম বেশি। তবে, ভারত থেকে গরু না এলে এবারও লাভবান হতে পারবেন বলে আশাবাদী এই খামারিরা।
কয়েকজন ক্রেতা জানান, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কম হবে প্রত্যাশা ছিল। তবে ক্রেতাদের কেউ বলছেন গত বছরের চেয়ে এবার দাম বেশি, আবার কেউ বলছেন তুলনামূলকভাবে কম। ভোর থেকে খামার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা থেকে শুরু করে গরুর খাবার প্রস্তুত ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারের কর্মচারীরা।
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার রাজেন্দ্রপুর গ্রামের খামারি প্রভাষ ঘোষ বলেন, তার খাবারের দুইটি গরু আছে ওজন প্রায় ১০ মণের উপরে। মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ লাখ টাকা। খামার চালানো কঠিন। গত বছর লাভ হয়েছিল, তাই এবছর গরু প্রস্তুত করা। তবে, এ বছর লোকশানের শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) ডা. বিষ্ণুপদ বিশ্বাস বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় এবারে কোরবানির জন্য গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ হাজার ৩১৮টি। চাহিদার বিপরীতে পশু প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ৬০৬টি। সেই হিসাবে ১৫ হাজার ২৮৮টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। তিনি আরও বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর ২ থেকে ৩% কোরবানির পশু বেড়েছে। কোনো সংকটের আশঙ্কা নেই। তিনি আরও বলেন, বর্ডার দিয়ে কোনো গরু আসবে না। এক্ষেত্রে সরকার কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। তারপরও চোরাই পথে কিছু ঢুকলেও প্রান্তিক চাষিদের তেমন সমস্যা হবে না।