ঢাকা শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ধর্ম-বর্ণের বিভেদ ভুলে ফ্যাসিবাদমুক্ত বর্ষবরণ

ধর্ম-বর্ণের বিভেদ ভুলে ফ্যাসিবাদমুক্ত বর্ষবরণ

গত বছর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুন্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর গত সোমবার আনন্দ উৎসাহ-উদ্দীপনায় সারাদেশজুড়ে উদযাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। আলোকিত বাংলাদেশের ব্যুরো প্রধানদের পাঠানোর খবর-

রংপুর : ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যে বিভেদ ভুলে সারাদেশের মতো রংপুরেও বর্ণিল আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে বাঙালির সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ। গত সোমবার সকালে বাংলা নতুন বছর-১৪৩২ কে স্বাগত জানিয়ে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ষবরণ। সকাল ১০টায় রংপুর জিলা স্কুলের বটতলা থেকে রংপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গ্রামীণ ঐতিহ্য তুলে ধরে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় শিশু, কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ অংশ নেয়া বিভিন্ন বয়সী মানুষের উচ্ছ্বাস আর বাহারি পোশাক পরিধান, নাচণ্ডগান, হইহুল্লোড়ে তৈরি হয় অন্যরকম আমেজ।

এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ সব পেশার মানুষ অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রংপুর টাউন হল মাঠে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, মুখোশ, পাপেট, পাখি, মাছসহ নানা বিশালাকৃতির প্রতিকৃতি শিল্পকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কারমাইকেল কলেজ, রংপুর সরকারি কলেজ, সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বর্ষবরণের নানা আয়োজন করা হয়।

খুলনা : গত সোমবার খুলনা জেলা প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, লোকজ মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সকালে রেলওয়ে স্টেশন প্রাঙ্গণ থেকে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ হাদিস পার্কে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য খুলনাবাসীসহ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানান বিভাগীয় কমিশনার। এছাড়া তিনি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

চট্টগ্রাম : এবার চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিলে হয়নি বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। গত রোববার সন্ধ্যায় হামলা ও ভাঙচুরের পর সেখানে অনুষ্ঠান বাতিল করে আয়োজকরা। যদিও গত সোমবার সকাল থেকে কেউ কেউ সেখানে জেনে আবার কেউ না জেনেও এসে ঘুরে গেছেন।

অনুষ্ঠান না হলেও ডিসি হিল এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশের একাধিক টিম। হিলের প্রবেশমুখে রয়েছে আচওয়ে। প্রতি বছর এখানে মেলা বসে। পাওয়া যায় বাঙালির নানা ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র। তবে এবার এরকম দোকান বসেনি। অনুষ্ঠান বাতিলের খবর না জেনে কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ দোকান বসেছে। তবে এগুলোতে নেই তেমন বেচা-কেনা। গত রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসন থেকে সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের সংগঠকদের কাছে এ তালিকা পাঠানো হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- উদীচী শিল্পী-গোষ্ঠী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, নরেন আবৃত্তি একাডেমি ও খেলাঘর। এদিকে, ডিসি হিলে না হলেও গত সোমবার সকাল থেকেই নগরের সিআরবি শিরিষ তলা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট ও জেলা শিল্পকলা একাডেমিতসহ বিভিন্ন স্থানে বর্ষবরণের নানা আয়োজন ছিল। গত সোমবার সকালে নগরের বাদশা মিয়া সড়কের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে বের হয় ঐতিহ্যের শোভাযাত্রা। এটি চট্টেশ্বরী মোড় হয়ে আলমাস, কাজীর দেউড়ি মোড়, এসএস খালেদ রোড, প্রেসক্লাবের সামনে থেকে ইউটার্ন হয়ে সার্সন রোড দিয়ে পুনরায় চারুকলা ইনস্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় তরমুজের ফালি, বাঘ, ইলিশ, শান্তির পায়রা ও লক্ষ্মী পেঁচাসহ বিভিন্ন মোটিফ নিয়ে চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত