ঢাকা শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

‘গার্ড অব অনার’ পেলেন মুশফিক

‘গার্ড অব অনার’ পেলেন মুশফিক

বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাঠ থেকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিয়েছেন এমন খেলোয়াড় খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালাতে হয়। মাশরাফি বিন মুর্তাজা, সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালরা প্রিয় আঙিনা থেকে বিদায় নিতে পারেননি। সদ্য বিদায়ের ঘোষণা দেয়া মুশফিকুর রহিমের বেলায় ঘটল ভিন্ন ঘটনা। গত বুধবার রাত ১১টার কিছু পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এক পোস্টে অবসরের ঘোষণা দেন মুশফিক। তিনি লিখেন, আমি আজ থেকে ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে অবসর নেয়ার ঘোষণা দিচ্ছি। আলহামদুলিল্লাহ, সবকিছুর জন্য। যদিও বৈশ্বিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন সীমিত ছিল, তবে একটি বিষয় নিশ্চিত যখনই আমি দেশের হয়ে মাঠে নেমেছি, সর্বদা শতভাগের বেশি দেয়ার চেষ্টা করেছি, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে। গতকাল বৃহস্পতিবার মিরপুরে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক বিদায়ের অপূর্ণতা কিছুটা হলেও ঘুচেছে এ উইকেটরক্ষ ব্যাটারের। এদিন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) ম্যাচে রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে খেলছেন মুশফিক। টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় মোহামেডান। প্যাড-গ্লাভস পরে মাঠে নামার সময় মুশফিককে গার্ড অব অনার দিয়েছেন সতীর্থরা। পরে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড প্রান্তে কেক কেটে মুশফিকের ওয়ানডে অবসরের উদযাপন হলো ছোট পরিসরে।

কেক কাটার সময় দুই দলের ক্রিকেটারদের ভিড়। মুশফিকের একদম পাশেই ছিলেন তামিম ইকবাল। ওই ভিড়ের একটু দূরে আম্পায়ারদের মাঠে প্রবেশের পথটাতে দাঁড়িয়ে হাবিবুল বাশার সুমন। তার নেতৃত্বেই অনেকটা সময় খেলেছিলেন মুশফিক। তামিম তাই উদযাপনে ডেকে নিলেন হাবিবুল বাশারকে। শুরুতে সাবেক অধিনায়ক আসতে চাইছিলেন না। তবুও তামিম বললেন, ‘আপনি কি রোজা রাখছেন? তবুও আসেন, আসেন। আপনি না অধিনায়ক?’ কেক কাটা শেষ হলে দ্রুতই ড্রেসিংরুমে চলে যান মুশফিক। রোজা রেখেছেন বলে নিজের কাটা কেক নিজেই খাননি মুশফিক।

এর আগে মোহামেডানের ক্রিকেটারদের কাছ থেকে গার্ড অব অনার পেয়েছেন মুশফিক। দিনের শুরুটা যোগ্য সম্মানের সঙ্গে হয়েছে তার। এর আগে টসের সময় তামিমকে নিয়ে মোহমেডানের অধিনায়ক তামিম বলেছেন, ‘সে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেরা শুভেচ্ছাদূতদের একজন। সে তার ক্যারিয়ারে অনেক কিছু অর্জন করেছে। আমি সবসময়ই একটা কথা বলি, বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক বড় ক্রিকেটাররাই এসেছেন; কিন্তু যদি কাউকে অনুসরণ করতে হয় সে অবশ্যই মুশফিকুর রহিম।’ ম্যাচ শেষে মুশফিক আবারও মাঠের আলোচনার কেন্দ্র। দুই দলের সবাই তার সঙ্গে হাত মেলালেন।

কয়েকজন বুকে জড়িয়ে নিলেন। দূর থেকে মিরপুরের দীর্ঘদিনের পিচ কিউরেটর গামিনি ডি সিলভাও হাত তুলে অভিবাদন জানালেন। এ যেন অন্যরকম অভিনন্দন। শুরুর নয় শেষের অভিনন্দন। মুশফিকের ওয়ানডে অবসরের শেষদিনটি তাই ভালোই কাটল। এর আগে ফেসবুকে আবেগঘন বার্তায় মুশফিককে শুভকামনা জানিয়েছেন সতীর্থরা। তামিম, মাশরাফি, তাসকিনরা প্রশংসায় ভাসিয়েছেন অভিজ্ঞ এ ব্যাটারকে।

২০০৬-এর আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মুশফিকের ওয়ানডেতে পথচলা শুরু। দীর্ঘ ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে খেলেছেন ২৭৪ ওয়ানডে। রাওয়ালপিন্ডিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডেতে করেছেন ২ রান। ২৭৪ ওয়ানডেতে ৭৯.৭০ স্ট্রাইকরেটে ৭৭৯৫ রান করেছেন মুশফিক। ৯ সেঞ্চুরির পাশাপাশি করেছেন ৪৯ ফিফটি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ওয়ানডেতে মুশফিকের রান ২৬৮৪। এক ভেন্যুতে যা কোনো ব্যাটারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। মিরপুরেই ২৮৯৭ রান নিয়ে প্রথম তামিম। ওয়ানডেতে উইকেটকিপার হিসেবে মুশফিকের ডিসমিসাল ২৯৭টি। বাংলাদেশের আরও কারও ১৩০টি। ২৪১টি ক্যাচ নেয়া মুশফিক স্টাম্পিং করেছেন ৫৬টি। ক্যাচ ও স্টাম্পিংয়েও মুশফিক বিশ্বের পঞ্চম।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত