ঢাকা রোববার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ভুটান পারলে আমরা কেন পারছি না

প্রশ্ন ঋতুপর্ণা চাকমা
ভুটান পারলে আমরা কেন পারছি না

প্রথমবার ভুটানের নারী ফুটবল লিগে খেলতে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের দশ ফুটবলার। জাতীয় দলে ডাক পেয়ে ফিরে এসেছেন পাঁচজন। দেশে ফিরেই কোচ পিটার বাটলারের অধীনে ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন তারা। তাদেরই একজন ঋতুপর্ণা চাকমা। যিনি সাফের অন্যতম সেরা সেরা খেলোয়াড়। পারো এফসির হয়ে ভুটানের প্রথম ম্যাচে গোলও পেয়েছেন এই উইঙ্গার। ভুটানি ক্লাবের পেশাদার আচরণে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে সবার মাঝে। ভুটান যাওয়ার আগে সেভাবে চিন্তাও করতে পারেননি ক্লাবগুলো পেশাদারিত্বের আবহে রয়েছে। ঋতুপর্ণা যে দলে রয়েছেন, সেখানে কোচণ্ডফিজিও সহ আনুষঙ্গিক সবকিছুই আছে। বিদেশি খেলোয়াড়দের জন্য প্রেসিডেন্ডস রিসোর্ট তো রয়েছেই। প্রায় দুই সপ্তাহ বিরতি দিয়ে একটি ম্যাচ হচ্ছে। তবে তা হচ্ছে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে।

ঋতুপর্ণারা তো প্রথম ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলেন পাহাড়ি বিপজ্জনক রাস্তায় প্রায় ৮ ঘণ্টা ভ্রমণ করে। ঋতুপর্ণা বলছিলেন, ‘আসলে ভুটান যে নারী ফুটবলে এতো জোর দিয়েছে তা চিন্তাও করিনি আমরা। পেশাদার ভিত্তিতে ওখানে লিগ চলছে। আমরা হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিক ম্যাচ খেলছি এক জেলা থেকে অন্য জেলায়। কখনও চিন্তা করিনি পাহাড়ি বিপজ্জনক রাস্তায় ভয়ে ভয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভ্রমণ করে খেলতে যেতে হবে। অথচ আমি একজন পাহাড়ি মেয়ে। আমার নিজেরই ভয় লেগেছে। রাস্তার এমন অবস্থা ছিল, একটু এদিক-সেদিক হলেই বড় বিপদ...।’ তারপরও তাদের পেশাদারিত্বের আচরণে ঋতুপর্ণা মুগ্ধ, ‘পেশাদার লিগ বলতে পারেন। তাই সবকিছু মেনে খেলছি। এতে নতুন করে অভিজ্ঞতা হচ্ছে। সেই ক্লাবে সবরকমের সুবিধা আছে, খাওয়া থেকে শুরু করে সবকিছুতে। একটি পেশাদার দলে যা থাকে। আমাদের নতুন করে সবকিছু অভিজ্ঞতা হচ্ছে।’ ভুটান নারী ফুটবলে সাফ অঞ্চলে বেশিদূর যেতে পারেনি। তারপরও তাদের পেশাদারিত্ব থেকে নিজ দেশের তুলনা করতে গিয়ে ঋতুপর্ণা বলেছেন, ‘আমরা দুইবারের সাফ চ্যাম্পিয়ন। তারপরও আমাদের এখানে নারী লিগের সেভাবে অবকাঠামো গড়ে উঠেনি। লিগ কবে হবে আমরা জানি না। পেশাদার ক্লাবেরও অভাব আছে। ভুটানের মতো ছোট দেশ যদি করতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারছি না ভেবে খারাপ লাগে। হয়তো সামনের দিকে সবকিছু ঠিক হবে, এমন আশায় আছি।’

ভুটানের লিগে খেলে মাসে ভালো অর্থ পাচ্ছেন ঋতুপর্ণা। তবে বাফুফের চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় হয়ে বিদেশের লিগে খেললে তখন আবার এখানে বেতন পাবেন না। ঋতুপর্ণা সেটা মেনে নিচ্ছেন স্বাভাবিকভাবে, ‘ভুটানের লিগে খেলে ভালোই অর্থ পাচ্ছি। তা বাফুফের দেওয়া বেতন থেকে বেশি। যেহেতু ক্যাম্পে সবসময় থাকতে পারব না। তাই আমার মনে হয়, বেতন না পেলেও সমস্যা হবে না।’ জর্ডানে তিনজাতি টুর্নামেন্ট শেষে ৭ জুন আবার ঋতুপর্ণাসহ ৫ জন ফিরে যাবেন ভুটান। আবার ফিরবেন এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের আগে। দেশে ফিরে ঋতুপর্ণাকে আবার জাতীয় দলের সঙ্গে একদিন অনুশীলন করতে না করতেই রাঙামাটি চলে যেতে হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত