যুব ও ক্রীড় উপদেষ্টার আহবানে সাড়া দেননি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ। সরকার চাইলেও পদ ছাড়তে রাজি নন জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক। প্রয়োজনে আদালতের দারস্থ হওয়ার হুমকি দিছেন তিনি। তবে সবশেষ তথ্য অনুযায়ী ফারুক আহমেদের সময় আর দীর্ঘায়িত না হওয়ারই পথ তৈরি হয়েছে। বোর্ড প্রেসিডেন্টের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বিসিবি ৮ পরিচালকা।
চিঠিতে বিষয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন।’ তিন পাতার সুদীর্ঘ সেই চিঠিতে বিসিবি সভাপতির দায়িত্বে ফারুকের বিভিন্ন কার্যক্রমের নজির তুলে ধরে নানা অভিযোগ করা হয়েছে। সভাপতির ‘স্বেচ্ছাচারিতা ও একক আধিপত্যের’ কারণে বোর্ডের বেশির ভাগ পরিচালক নিজেদের দায়িত্ব সঠিক ও স্বাধীনভাবে পালন করতে পারছেন না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। চিঠিতে স্বাক্ষর করা আট পরিচালকের একজন নাজমুল আবেদীন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পালাবদলের পথ ধরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে যিনি পরিচালক হয়েছিলেন ফারুকের সঙ্গেই। চিঠিতে প্রথম স্বাক্ষরই তার।
এছাড়া স্বাক্ষরকারীদের তালিকায় আছেন ফাহিম সিনহা, সাইফুল আল স্বপন চৌধুরী, ইফতেখার রহমান, মাহবুব আনাম, কাজী ইনাম আহমেদ, মঞ্জুর আলম ও সালাউদ্দিন চৌধুরি। বর্তমান পরিচালকদের মধ্যে স্বাক্ষর করেননি শুধু আকরাম খান। সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর বোর্ডের বিভিন্ন কমিটি পুনর্গঠনে ৫ মাস দেরি করার ব্যাপারটি চিঠিতে বলা হয়েছে। বোর্ড পরিচালকদের না জানিয়ে ফারুক এককভাবে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও একের পর এক দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করে আসছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে চিঠিকে।
পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে আলোচনা না করে একক সিদ্ধান্তে জাতীয় দলের সাবেক কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহেকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বোর্ড সভাপতি, এমন গুরুতর অভিযোগও করা হয়েছে চিঠিতে। পাশাপাশি কোচিং স্টাফের অন্য সদস্যদের ক্ষেত্রেও পরিচালকদের মতামত নেওয়া হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে। এছাড়াও বোর্ডের নানা নিয়োগ ও দুর্নীতিগ্রস্থদের ছাঁটাই না করা, বিপিএল নিয়ে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগও করা হয়েছে। ‘ফারুক আহমেদের স্বৈরাচারী মনোভাব ও কর্মকান্ডকে’ পর্ষদ সমর্থন না করায় তিনি বিসিবির পরিচালকদের সঙ্গে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অসৌজন্যমূলক’ আচরণ করে আসছেন বলেও জানানো হয় চিঠিতে।
চিঠির শেষ ভাগে উল্লেখ করা হয়, ‘ফারুক আহমেদের স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতিপরায়নতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, একক আধিপত্য ও ঔদ্ধত্যের কারণে নিরুপায় হয়ে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এবং বিসিবিকে একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে’ তার ওপর অনাস্থা আনছেন পরিচালকরা।
চিঠিতে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে বুধবারের। এ দিন রাতেই ফারুক আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা জানান, বিসিবির শীর্ষ পদে পরিবর্তন চান তারা। ফারুক নিজে থেকে পদত্যাগ না করলে অবশ্য তাকে সরিয়ে দেওয়ার পথে ঝুঁকি আছে অনেক।