ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বিমান বাহিনীর গুলিতেই মারা গেছে নাহিদ, দাবি পরিবারের

বিমান বাহিনীর গুলিতেই মারা গেছে নাহিদ, দাবি পরিবারের

কক্সবাজার শহরের বিমানবন্দর পশ্চিমে বিমান বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় এলাকাবাসীর সংঘর্ষে নিহত শিহাব কবির নাহিদের মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে।

ঘটনার এক সপ্তাহ পর সোমবার (৩ মার্চ) রাতে নিহতের পিতা মো. নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় সরাসরি কারও নাম উল্লেখ না থাকলেও, এজাহারে নাহিদের মৃত্যুর জন্য বিমান বাহিনীর সদস্যদের দায়ী করা হয়েছে।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে স্থানীয় মহিউদ্দিন নামে এক যুবক নাসির উদ্দিনকে জানান, বিমান বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে তার ছেলে শিহাব কবির নাহিদ নিহত হয়েছেন। পরে পরিবারের লোকজন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে গিয়ে নাহিদের মরদেহ শনাক্ত করেন এবং ময়নাতদন্ত শেষে ধর্মীয় রীতিতে দাফন সম্পন্ন করেন।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, নিহত নাহিদের সঙ্গে বিমান বাহিনীর কারও কোনো বিরোধ ছিল না। তবে ওই দিন সকালে স্থানীয় যুবক জাহেদুল ইসলামকে বিমান বাহিনীর সদস্যরা ঘাঁটিতে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে—এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসী জাহেদুলকে ফিরিয়ে আনতে গেলে বিমান বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে বিমান বাহিনীর সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি চালালে গুলিবিদ্ধ হন নাহিদ। পরে বিমান বাহিনীর সদস্যরা তাকে তুলে নিয়ে ঘাঁটিতে নিয়ে যান, সেখানে দীর্ঘক্ষণ রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় বলে এজাহারে দাবি করা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. ইলিয়াস খান জানান, নিহতের পিতার দায়ের করা অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর আগে, ১ মার্চ বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকেও আরেকটি মামলা করা হয়। সেই মামলায় দুজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে নাম উল্লেখ করা দুই আসামির পরিচয় পুলিশ প্রকাশ করেনি।

বিমান বাহিনীর দায়ের করা মামলার বাদী সার্জেন্ট মো. জিয়াউর হক। তার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সংঘর্ষে বিমান বাহিনীর চার সদস্য আহত হয়েছেন এবং সরকারি গাড়ি ও সম্পদ ভাঙচুর করা হয়েছে। এজাহারে সমিতিপাড়ার বাসিন্দা রাহাত ইকবাল ওরফে ইকবাল বাহার ও এজাবত উল্লাহকে অভিযুক্ত করা হয়।

ঘটনার পর বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, সমিতিপাড়ার কিছু দুর্বৃত্ত বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা চালায়। চেকপোস্টে কাগজপত্র না থাকা এক মোটরসাইকেল আরোহীকে ঘাঁটির ভেতরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর, তার গ্রেপ্তারের গুজবে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে হামলা চালায়। এসময় আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। তবে জনসাধারণের ওপর কোনও তাজা গুলি ছোড়া হয়নি বলে দাবি করে আইএসপিআর।

প্রসঙ্গত, ২৪ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষে নাহিদ নিহত ছাড়াও অন্তত ১৭ জন আহত হন, যাদের মধ্যে ৩ জন বিমান বাহিনীর সদস্য।

নাহিদ,গুলি,বিমান বাহিনী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত