উত্তর চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৬৯ হাজার ৪১৯টি পশু। এরমধ্যে ৩৪ হাজার ২১১টি গরু, ৪ হাজার ১১২টি মহিষ, ২৮ হাজার ৭৪০টি ছাগল, ২ হাজার ৩৫৬টি ভেড়া। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৪৭ হাজারের মতো। সেই তুলনায় কোরবানিযোগ্য পশুর যোগান বেশি রয়েছে। এরফলে পশুর মূল্য নিয়ে নৈরাজ্য হওয়ার সম্ভাবনা কম। তারপরেও পশু সম্পদ বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন পশু কেনা-বেচায় নৈরাজ্য ঠেকাতে মাঠে থাকবে বলে জানা গেছে। এদিকে আগামি কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ইউনিয়নের ঢালকাটা গ্রামের বাবুল মিস্ত্রীর বাড়িতে দেখা মিলেছে বিশালাকৃতির দুইটি গরু। যাদের নাম রাখা হয়েছে যথাক্রমে ‘কালা মানিক ১ ও ২’। এটির একটি হচ্ছে পাকিস্তানি শাহীওয়াল; অন্যটি অস্ট্রেলিয়ার হলেস্টেন ফিজিয়ান। গরু দুইটির দাম ১১ লাখ করে ২২ লাখ টাকা হাঁকাচ্ছেন গরুর মালিক মো. রাসেদ (৩৮)। বিশাল এই ষাঁড় দু’টি দেখতে আশেপাশের মানুষ প্রতিদিনই ভিড় করছেন।
গরুর মালিক মো. রাসেদ বলেন, শখ করে গরু দু’টির নাম রেখেছি ‘কালা মিয়া’। এই গরু দু’টি বাছুর ছিল। আমি চার বছর ধরে তাদের লালন-পালন করে আসছি। প্রতিদিন গরু দু’টির পেছনে সময় দেই নিজের সন্তানদের মতোই। ১১ লাখ টাকা করে দাম চাচ্ছি। আমি আশা করছি- আমার বাড়িতে এসে ক্রেতারা গুরুগুলো পছন্দ করবেন এবং কিনে নিয়ে যাবেন। যদি বাড়িতে বিক্রি না হয় তাহলে এ শখের গরু দুইটি ঈদের আগে করে স্থানীয় কোরবানির পশুর হাটে তোলা হবে। তিনি আরও জানান, প্রতি গরুর ওজন হবে প্রায় ২০ মণ করে। প্রতিদিনই তিনবার গোসল করাতে হয় তাদের।
গরমের সময় চারবারও গোসল করাতে হয়। খাবারের মধ্যে ছোলা, ভূসি, কুঁড়ো ও কাঁচা-শুকনো ঘাস রয়েছে। স্থানীয় নানুপুরের বাসিন্দা মো. জহুর, বাবলা, মো. হাসান জানান, মালিক খুব যত্ন করে গরু দু’টিকে। এর আগে এই গ্রামে কখনও এমন বড় গরু দেখিনি। উপজেলা বড় পশু বাজার ভারত সীমান্ত এলাকা বাগান বাজার ইজারাদার মো. কাসেম বলেন- এখানে পূর্বের চেয়েও প্রতি হাটে বেশি পশু উঠেছে। ছোট বড় প্রতি পশু থেকে ৬০০ টাকা হাছিল নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মোমিন বলেন, আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ৬৯ হাজার ৪১৯টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩৪ হাজার ২১১টি গরু, ৪ হাজার ১১২টি মহিষ, ২৮ হাজার ৭৪০টি ছাগল, ২ হাজার ৩৫৬টি ভেড়া। তিনি আরও বলেন, আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সব পশুর হাটে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে যেখানে প্রয়োজন সেখানে ভ্রাম্যমাণ ভেটেরিনারি ক্লিনিক বসানো হচ্ছে। সেখানে ভেটেরিনারি সার্জন পশুদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন বলে তিনি জানান।