পার্বত্য জেলা পরিষদে নিয়োগ ও শিক্ষাবৃত্তি জনসংখ্যার অনুপাতে করার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ, রাঙামাটি জেলা শাখা। গতকাল সোমবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. হাবিব উল্লাহ মারুফ এর কাছে স্মারকলিপিটি হস্তান্তর করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান, সহ-সভাপতি এসএমজি আজম, সাধারণ সম্পাদক ডা. মুহাম্মাদ ইব্রাহিম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইব্রাহিম, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদা আক্তার এবং ছাত্র পরিষদ নেতা তাজুল ইসলাম। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে মেধার ভিত্তিতে ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হলে বৈষম্য দূরীকরণ জরুরি। বিশেষ করে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে দীর্ঘদিন ধরে চালু থাকা একতরফা নীতির মাধ্যমে বাঙালি জনগোষ্ঠী এবং কিছু প্রান্তিক নৃ-গোষ্ঠী অবহেলিত হয়ে আসছে। সংগঠনের জেলা সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, জনসংখ্যার ভিত্তিতে সব জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত না করলে পার্বত্য অঞ্চলে ন্যায্যতার প্রশ্নেই সংকট থেকে যাবে। আমরা শুধু বাঙালিদের নয়, খিয়াং, লুসাই, তঞ্চঙ্যা, খুমি, আসামের মতো প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলোরও সমান সুযোগের দাবি করছি।’ সাধারণ সম্পাদক ডা. মুহাম্মাদ ইব্রাহিম বলেন, জাতীয় সম্পদ বণ্টনে পক্ষপাত হলে মানুষের মনে অসন্তোষ জন্ম নেয়। আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী, তাই বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে সকল জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার দাবি জানাচ্ছি।’
স্মারকলিপিতে আরও অভিযোগ করা হয়, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়োগ ও শিক্ষাবৃত্তিতে কোনো সরকারি নির্দেশনা ছাড়াই একতরফাভাবে ৭০% কোটা নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য এবং মাত্র ৩০% কোটা বাঙালিদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা সরকার ঘোষিত নীতির পরিপন্থি। এমনকি নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য বরাদ্দকৃত শতকরা অংশের মধ্যে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলো, যেখানে অধিকাংশ সুবিধা চলে যাচ্ছে চাকমা সম্প্রদায়ের দখলে। তাই জনসংখ্যা অনুপাতে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ ও বৃত্তি বণ্টনের দাবি জানান নেতারা। এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মারুফ জানান, উত্থাপিত দাবিসমূহের স্মারকলিপি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করা হয়েছে এবং তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।