চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঈমান হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার বিকালে হাজীগঞ্জের ডেঞ্জার জোন হিসেবে খ্যাত ৫নং ওয়ার্ড কলেজ রোডের কলার আড়তদার ওই ব্যবসায়ী কুমিল্লার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। চাঁদপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে ডেঙ্গুপ্রবণ এলাকা হাজীগঞ্জ। জেলা সদরের চেয়ে হাজীগঞ্জে উপজেলায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি। প্রতিদিনই আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে ডেঙ্গু রোগী। হাজীগঞ্জে এ রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। উপজেলার মধ্যে পৌরসভার ৪ ও ৫নং ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। ওই এলাকার বেশ কয়েকজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন কয়েকজন।
তাদের মধ্যে একজন উপজেলার ৮নং হাটিলা ইউনিয়নের ওসমান গনি। প্রথমে জ্বর, সর্দি নিয়ে হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসা শেষে ডেঙ্গু রোগ ধরা পড়লে গেলো একসপ্তাহ ধরে চিকিৎসা নেন হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এখন কিছুটা সুস্থ আছেন তিনি। তার মতোই উপজেলার টোরাগড়ের ফাতিন নূর, মকিমাবাদের কাউছার ও বাকিলার আশ্রাফ উদ্দিন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে এখন সুস্থ আছেন। হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী এপ্রিল-মে মাসে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা নেন ৪৯ জন। শুধুমাত্র জুন মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৭ জন। এদের মধ্যে তিনজনকে রেফার্ড করা হয়েছে কুমিল্লা এবং ঢাকায়। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন অর্ধশতাধিক। এ সব তথ্যের বাহিরে আরও অনেকেই আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. এমএ ইসলাম সুমন বলেন, হাজীগঞ্জে প্রতিদিনই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। ডেঙ্গুর পরিস্থিতি ভয়াবহ। হাজীগঞ্জ শাহমিরান হাসপাতালের ম্যানেজার জানান, শাহ মিরান হাসপাতালে প্রতিদিনই ২/৩ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়। হাজীগঞ্জ বিসমিল্লাহ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এমডি শেখ তোফায়ল আহমেদ জানান, প্রতিদিন হাসপাতালে প্রচুর ডেঙ্গু রোগী আসছে।
বর্ষার মৌসুম শুরু হওয়ায় বৃষ্টির কারণে হাজীগঞ্জে বেড়েছে মশার উপদ্রব। পৌরবাসীর দাবি পৌরসভার পক্ষ থেকে যেন মশার ওষুধ ছিটানো হয়।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কনসালটেন্ট মেডিসিন ও নিউরো মেডিসিনে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চিকিৎসক, নিউ মেডিনোভা ডিজিটাল সেন্টারের এমডি ডাক্তার মোহাম্মদ মহিবুল আলম রুবেল বলেন জানান, জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি ডেঙ্গু রোগী ধরা পড়ছে হাজীগঞ্জে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে বাড়ির পাশে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন, বনজঙ্গল পরিষ্কার রাখা ও ঘুমানোর সময় মশারি টানানোসহ সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন- ডেঙ্গুর সাধারণত ৪টি লক্ষণ থাকে তা হলো টি-১, টি-২, টি-৩, টি-৪। এর মধ্যে টি-১, টি-২ হাজীগঞ্জ বা চাঁদপুরে চিকিৎসা হয় এবং ট-৩, টি-৪ যদি আলামত পাওয়া যায় তাহলে কুমিল্লা বা ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।