
ভোলায় মেঘনার ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পরেছে শিবপুর ও মেদুয়া ইউনিয়নবাসী। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে যুগিরঘোল চত্বরে নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।
এলাকাবাসীর একটাই চাওয়া আর যেন তাদের ফসলি জমি এবং ভিটা বাড়ি হরাতে না হয়। খর স্রোতা মেঘনায় প্রতিনিয়তই ভাঙছে ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর এবং দৌলতখান উপজেলার মেদুয়া ইউনিয়ন। মেঘনার ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার। মরার উপর খাঁরার ঘা হওয়ার মতো অবস্থা। একে তো ভাঙছে মেঘনা, তার উপর বর্ষা মৌসুমে এ ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। কয়েক মাসের ব্যবধানে ভোলার খাল সংলগ্ন এলাকাসহ প্রায় ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার ফসলি জমি ও ভিটে-মাটি নদীর গর্ভে চলে গেছে। নদী থেকে আর মাত্র ৫০ মিটার দূরে আছে শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ। যদি এই বেড়িবাঁধ ভেঙে যায় তাহলে ভোলা শহর পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যেখানে রয়েছে ভোলার সরকারি অনেক স্থাপনা। শিবপুরের নদী ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে ভোলা সদরের যুগিরগোলের দূরত্ব মাত্র ৪ কিলোমিটার এই জায়গা জুড়ে আছে কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২০টির উপরে প্রাইমারি স্কুল। রয়েছে ভোলার একমাত্র বিদ্যাপাঠ ভোলা সরকারি কলেজ এবং ভোলার ২০ লাখ মানুষের চিকিৎসার শেষ ঠিকানা ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালসহ অনেক সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। এই সমস্ত স্থাপনা রক্ষা করতে হলে অতি দ্রুত মেঘনার ভাঙন থেকে শিবপুরকে রক্ষা করতে হবে। মেঘনার ভাঙনে শিবপুর ও মেদুয়া ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ তাদের ফসলি জমি এবং ভিটা-মাটি হারিয়ে আজ প্রায় নিঃস্ব। মেঘনার ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদী ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষগুলো।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগের মাধ্যমে বালু দিয়ে ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পানির স্রোতের কারণে সেই সব জিও ব্যাগ কোনো কাজেই আসছে না। প্রতিনিয়তই ভাঙনে শিবপুর ও মেদুয়া ইউনিয়ন। ওই একালার মানুষের এখন শুধু একটাই দাবি নিরাপদ টেকসই বাঁধ নির্মাণসহ সিসি ব্লকের মাধ্যমে এই ভাঙন রোধ করতে হবে। এ সময় প্রায় ঘণ্টা খানেক সময় ওই সড়কে যান চালাচল বন্ধ হয়ে যায়।
মানববন্ধন বক্তব্য প্রদান করেন- শিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি একেএম নুর হোসেন হাওলাদার। মানববন্ধন শেষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বারাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন- ভাঙনকবলিত এলাকার সাধারণ মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিন আরিফ স্মারকলিপি গ্রহণ করে অফিস রুম থেকে বের হয়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের চেষ্টা চলমান আছে। আপনাদের যে দাবি সেটা আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করে সিসি ব্লক দিবো এবং জিও ব্যাগের মাধ্যমে বালি দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ সবসময় চলমান থাকবে। তার বক্তব্যের পরে এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ থেকে সরে আসেন এবং কর্মসূচি সমাপ্ত করেন। শেষে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।