ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

এই মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ নেই : নূর

এই মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ নেই : নূর

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেছেন, এই মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ নেই। তাই আগে স্থানীয় নির্বাচন হলে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা পরীক্ষা হবে। মানুষও ভোট দেয়ার সুযোগ পাবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশনের সাথে পরিষদ নেতাদের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।

বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল বা স্থগিত করে দলটিকে ভোটের মাঠের বাইরে রাখার দাবি জানিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে দলের সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ ও তার জোটের কোনো দল যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেই কথা কমিশনকে জানানো হয়েছে।

নুরুল হক নূর বলেন, দুটো বিষয় কেন্দ্রীক বেশি আলোচনা করেছি। সংকটকালীন সময়ে তারা দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের পারফরমেন্সের ওপরে জাতির আগামীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে। এখন আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রস্তুতি কেমন, কী কাজ করছে- বিশেষ করে অনেক দিন ধরেই প্রবাসীরা ভোট দেয়ার অধিকার চাচ্ছেন। প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে বলেছেন। তাই তাদের ভোটদানের সুযোগ নিশ্চিত করতে কমিশন কী কাজ করছে, এটা আদৌ সম্ভব কি না এয়োদশ সংসদ নির্বাচনে সেই আলোচনা হয়েছে। কমিশন বলেছে তারা চেষ্টা করছে।

কারচুপির নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য একটা দক্ষ প্রশাসন দরকার। গত ১৬ বছরের যে প্রশাসন কারচুপির নির্বাচন করেছে, তাদের দারা কী করে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। আগে বলতো আওয়ামী চেতনার উদ্বুদ্ধ। এখন কেউ বলছে গণ অধিকার পরিষদের লোক, কেউ বলে বিএনপির লোক, কেউ বলে জামায়াতের লোক। আবার কেউ বলে আমরা ছাত্রদের প্রতিনিধি। কাজেই এখনকার প্রশাসনের মধ্যেও যদি এই রাজনৈতিক মনোভাব থাকে, তাহলে তো নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। তাই পরিষ্কারভাবে আমরা বলেছি যে, নির্বাচনে যে দায়িত্ব পালন করবেন-রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা, তারা যদি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকে; সেটা যেন কমিশন আগেভাগেই নিশ্চিত করেন। বিতর্কিত নির্বাচনে যারা জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র যে ব্যবস্থা নেবে, তা রাষ্ট্র নেবে। তাদের অনেকে বহাল তবিয়তে আছে। অনেককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে। অনেক কিন্তু তলে তলে সুযোগও দেয়া হচ্ছে। কাজেই সে থাকে কে থাকে তারা তো বুঝবে না। কিন্তু আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি তারা যেন নির্বাচনি দায়িত্বে না থাকে।

স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, দলগুলোর পক্ষ থেকে এরইমধ্যে বলা হয়েছে কিংবা রাজনতিক অঙ্গনেও এই আলোচনা চলছে যে, স্থানীয় নির্বাচনগুলো আগে হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যেহেতু স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, তারা কারো নির্দেশনায় নির্বাচন করবেন না। তবে তারা যেহেতু সংকটকালীন দায়িত্ব নিয়েছে, একটা অর্থবহ নির্বাচনের জন্য সেখানে রাজনৈতিক ঐকমত্য জরুরি। প্রধান উপদেষ্টা যে একটা সম্ভাব্য যেট দিয়েছেন, সেটাকে সামনে রেখেই তারা একটা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঐকমত্য যদি স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয় তাহলে তারা বিবেচনা করবেন, যদি ঐকমত্য না হয়, তারা তো তা করতে পারবেন না।

নামসর্বস্ব পার্টি নিবন্ধন নিয়ে নুরুল হক নূর বলেন, নামসর্বস্ব পার্টি যারা নিবন্ধন নিয়েছে, এবং আনুপাতিকভাবে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সেখানে কিন্তু সবগুলো দলের মার্কা থাকবে। নির্বাচন কমিশনের যে শর্ত আছে ১০০ উপজেলা এবং এক তৃতীয়াংশ জেলায় অফিস ও কমিশন থাকতে হবে। এটা যে রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিপালন করছে না, তাদের নিবন্ধন স্থগিত করা উচিত। এতে নামসর্বস্ব বা কিংস পার্টির নিবন্ধন কিন্তু বাতিল হয়ে যাবে।

আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেবে কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কী, করবে না সেই সিদ্ধান্ত অবশ্যই নির্বাচন কমিশন একা নিতে পারবে না। এজন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হতে হবে। সরকারেরও এখানে ভূমিকা নিতে হবে। এরইমধ্যে সেই ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে গত মিটিংয়েও রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেজন্য তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে। এছাড়া ভূঁইফোড় ও কিংস পার্টির হালনাগাদ তথ্য নিয়ে নিবন্ধন স্থগিত তারা করতে পারে।

দলীয় মার্কা নিয়ে নূর বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের সিদ্ধান্ত হলো আগামী নির্বাচনে আমরা দলীয় মার্কায় অংশ নেবো। একটা আলোচনা হচ্ছে সমমনা দল আমাদের নেতৃত্বে কাজ করবে আগামীতে তাদের নিয়ে একটা জোট হতে পারে। আমরা কারো নেতৃত্বে কোনো জোটে যাচ্ছি না এটা পরিষ্কার। ছাত্ররা নতুন দল করছে। তাদের আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে তাদের সঙ্গে দল করা, তাদের সঙ্গে জোট করা এই সমস্ত আলোচনা নেই। কারণ তারা এখনো দলই গঠন করেনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত