আমের নাম নিলে সর্বপ্রথম যে জেলার নাম মুখে আসে সেটি হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এ জেলার আম স্বাদে ও সুগন্ধে অতুলনীয় হওয়ার কারণে আমের রাজ্বধানী হিসেবে খ্যাতি রয়েছে। মৌসুমের শুরুতে জেলার বাগানগুলোতে দেখা মিলেতে শুরু করেছে মুকুলের। কিছু-কিছু গাছে মুকুল ফুটে আমের গুটিও বের হয়েছে। গত বছর আম ফলনের বিপর্যের পর এবার অধিক ফলন নিয়ে আশাবাদী বাগানিরা। গত মৌসুমের শুরুতে কম তাপমাত্রা এবং প্রাকৃতিকগতভাবে কম ফলনের বছর হওয়ার চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের ব্যবসায় দেখা দিয়েছিল মন্দা। জেলাজুড়ে মাত্র ৭০ থেকে ৭৩ ভাগ গাছে মুকুল এসেছিল। যা তার আগের বছর ছিল প্রায় শতভাগ। তবে চলতি বছরে আমগাছগুলোতে মুকুলে ভরে উঠবে, এমনটাই আশা করছেন এখানকার আমচাষি ও বাগান মালিকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমবাগান ছিল ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর। এবার ১০০ হেক্টর কমে হয়েছে ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর। এর মধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছে ৫ হাজার ১৮০ হেক্টর, শিবগঞ্জ উপজেলায় ২০ হাজার ১০০ হেক্টর, গোমস্তাপুর উপজেলায় ৪ হাজার ২৪০ হেক্টর, নাচোল উপজেলায় ৪ হাজার ৩৫০ হেক্টর ও ভোলাহাট উপজেলায় ৩ হাজার ৬৩৪ হেক্টর জ্বমিতে আম চাষাবাদ হচ্ছে। সরেজ্বমিনে বাগানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বড় গাছের তুলনায় বাগানের ছোট-ছোট আম গাছগুলোতে আগে মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। বড় গাছগুলোয় মুকুল আসলেও ছোটগাছের তুলনায় কম। বাগানজুড়ে চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিচর্যার কাজে। বরেন্দ্র অঞ্চলের আমচাষি মুনজের আলম মানিক বলেন, গত বছর ফাল্গুনে মুকুল ফুটায় আম ভালো হয়নি। এবার অন ইয়ার হবে আশা করছি। যার কারণে মুকুলও ভালো হবে, আমও ভালো হবে। এখন আমরা বাগানের পরিচর্যা শুরু করে দিয়েছি। যেগুলো গাছে মুকুল বের হয়নি আশা করছি কয়েকদিনের ভিতরে মুকুল বের হয়ে যাবে।
শিবগঞ্জের আমচাষি রবিউল বলেন, গতবারের তুলনায় এবার কম বাগান আছে আমার। বাগানের গাছগুলোয় মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। এখন বালাইনাশক স্প্রে করা হয়েছে। তবে মাঝেমধ্যে কুয়াশা জেঁকে বসায় মুকুলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্তু মুকুল ফোটার সময়সীমা। যদি চলতি মাসে তাপমাত্রা কমে যায় তাহলে মুকুল ফুটতে ব্যাহত হবে। যার কারণে গাছগুলো দেরিতে মুকুলিত হয়। তিনি আরো বলেন, গতবছর যেসব ডালে মুকুল আসেনি সেসব ডালে এবছর আসবে। তবে এটা কম বেশি হতে পারে। গত মৌসুম আমের জ্বন্য ছিল অফ ইয়ার। ফলে আমের ফলন গতবারের তুলনায় এবার বেশি হবে বলে আশাবাদী তিনি।