চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মিশন শুরুর আগের দিন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন যে কোনো দলকে হারানোর সামর্থ আছে তাদের। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তার প্রমাণ দিতে পারেননি তারা। রোহিত শর্মার দলের কাছে ৬ উইকেটের হার দিয়ে অভিযান শুরু করেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। এই হারে সেমিফাইনালের দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে গেছে টাইগাররা। তবে এখনো সম্ভাবনা একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। সমীকরণ কঠিন হলেও কিছুটা আশা দেখতেই পারেন বাংলাদেশি ভক্ত-সমর্থকরা।
‘এ’ গ্রুপের চার দলই একটি করে ম্যাচ খেলেছে। যেখানে ভারত ও নিউজিল্যান্ড জয় পেয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান হেরেছে। সমান ২ পয়েন্ট করে থাকলেও নেট রানরেটে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে আছে নিউজিল্যান্ড, তারপরই অবস্থান ভারতের। আর বাংলাদেশ আছে তিনে। কারণ বাংলাদেশের চেয়েও বাজেভাবে হেরেছিল পাকিস্তান। এখান থেকে বাংলাদেশকে সেমিতে যেতে হলে বাকি দুই ম্যাচেই জিততে হবে। তবে এক ম্যাচ জিতলেও সম্ভাবনা থাকবে। তবে সেক্ষেত্রে অন্য ম্যাচের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। একই সঙ্গে রানরেটের কঠিন সমীকরণের মুখোমুখি হতে হবে।
নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে যদি বাংলাদেশ জেতে তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে চার। আর ভারত ও নিউজিল্যান্ড যদি আরো একটি করে ম্যাচ জেতে তাহলে তাদেরও হবে চার পয়েন্ট করে। সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে নেট রানরেট। আর বাংলাদেশ যদি এক ম্যাচ জেতে এবং সেটা হয় পাকিস্তানের বিপক্ষে, তাহলে পয়েন্ট হবে দুই। সে ক্ষেত্রে পাকিস্তান-ভারত ও নিউজিল্যান্ড-ভারত ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। আর পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরে নিউজিল্যান্ডকে হারালে সসমীকরণ আরো জটিল হবে বাংলাদেশের জন্য। বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে আরও দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি তাদের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। আর গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ মাঠে নামবে ২৭ ফেব্রুয়ারি। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। এই দুটি ম্যাচই পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলী অনিক লড়াই করে ২২৮ রানের লড়াকু পুঁজি এনে দিলেও সেটা জেতার জন্য যথেষ্ট হয়নি। শুভমান গিলের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভারত ২১ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নেয়। ম্যাচ শেষে অধিনায়খ শান্ত জানিয়েছেন যে, ঠিক কোন কোন জায়গায় বাংলাদেশ হেরেছে, ‘আমি মনে করি প্রথম পাওয়ার প্লে। সেখানে আমরা যেভাবে ব্যাটিং করেছি সেখানেই আমাদের ম্যাচটা শেষ হয়ে গেছে। ওই অবস্থা থেকে লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের পক্ষে রিকভার করা কঠিন। মাঠে অবশ্য আমরা বেশ কিছু ভুল করেছি। বেশ কিছু ক্যাচ ছেড়েছি। রান আউট মিস করেছি। ওই সুযোগগুলো যদি কাজে লাগানো যেত, তাহলে ম্যাচের ফল ভিন্ন হলেও হতে পারত।’ তবে হৃদয় ও জাকেরের প্রশংসা করেছেন অধিনায়ক, ‘তবে হৃদয় ও জাকের যেভাবে ব্যাটিং করেছে সেটা ছিল অসাধারণ। এই ধরনের উইকেটে স্পিনাররা সুবিধা পায়। বল ঘোরে। সেখানে হৃদয় ও জাকের খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। আমি মনে করি না আমাদের স্পিন বোলারের ঘাটতি ছিল। মাহমুদউল্লাহর কিছুটা ইনজুরি রয়েছে। তবে আমাদের পেসাররা কিন্তু খারাপ বোলিং করেনি। যদি আমরা শুরুতে উইকেট তুলে নিতে পারতাম তাহলে ম্যাচের ফল ভিন্ন হতেও পারত।’