ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

আশুলিয়ায় গভীর রাতে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী নেতাদের ওপর হামলা, আহত ৮

আশুলিয়ায় গভীর রাতে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী নেতাদের ওপর হামলা, আহত ৮

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় এনসিপির শ্রমিক উইং ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোয়াইলবাড়ি বাজার এলাকায় এ হামলা হয়। আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ, একটি অবৈধ সিসা কারখানা বন্ধ করতে বলায় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় আটজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক রিফাত আহমেদ ওরফে ইমন (২৭), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাভার উপজেলার যুগ্ম সদস্যসচিব তাওহিদুল ইসলাম ওরফে সানভি (২৩) ও জ্যেষ্ঠ সহ-মুখ্য সংগঠক হৃদয় হাসান (২৪)।

আহত অন্যরা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাভার উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল ইসলাম (২৫), মুখপাত্র আল মাসুম ওরফে সজীব (২৬), সদস্য ফাহাদুল ইসলাম ফাহাদ (২৯), সিটি ইউনিভার্সিটির আহ্বায়ক সৈয়দ ইমন (২৪) ও সদস্যসচিব তাওহিদ আহমেদ ওরফে শান্ত (২৪)। তাদের সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার সফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে তিনজনের মধ্যে একজনের মাথায় সেলাই দেওয়া হয়েছে। বাকিরা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত নেতাকর্মীরা জানান, গতকাল বুধবার রাতে এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের এক নেতাসহ সাভার উপজেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকায় ঘুরতে যান। সেখানে একজনের বাসায় তাদের দাওয়াত ছিল। রান্না চলাকালে তারা শিমুলিয়া এলাকায় চা খেতে যান। রাত ১০টায় সেখানে গিয়ে একটি সেতুর ওপর বসে ছিলেন তারা। একপর্যায়ে ঝাঁজালো গন্ধ পাওয়ায় স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে জানতে পারেন, পাশেই অবৈধভাবে গড়ে ওঠা একটি কারখানায় ব্যাটারি গলিয়ে সিসা তৈরি করা হয়।

পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানান তারা। পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল থেকে ভিডিও ফুটেজ নিয়ে আসতে বলা হয়। পরে তাওহিদ আহমেদের মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয়ে এক ব্যক্তি কল দিয়ে কারখানায় যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চান এবং তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। পরে পথে গোয়াইলবাড়ি বাজার এলাকায় একটি মাইক্রোবাসে করে একদল লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালান। খবর পেয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের উদ্ধার করেন। আহত হৃদয় হাসান বলেন, ‘আমাদের মারধরের সময় মারধরকারীরা এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসাদুল ইসলাম মুকুলকে কল দিয়েছিল। মুকুল হামলাকারীদের আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ নই, মারধরের পর সে বিষয়টি দেখবে বলে জানিয়ে দেয়।’

এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক রিফাত আহমেদ বলেন, ‘প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়া কারখানাটি না চালানোর জন্য বলে সেখান থেকে চলে আসি। এরপর ঘোরাঘুরি শেষে ঘণ্টা দেড়েক পর আবার সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় কারখানাটি চালু দেখতে পাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুরুতে ওই কারখানার লোকজন বলে, মুকুল নামের একজনকে টাকা দিই, আপনারা কেন বাধা দেন?’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসাদুল ইসলাম ওরফে মুকুল বলেন, ‘মধ্যরাতে এক ব্যক্তি ফোন করে জানান, কিছু সমন্বয়কারী ওই ফ্যাক্টরিতে আক্রমণ করেছেন। রাত ১টার দিকে হুট করে আমার বাসার কাছে এমন ঘটনার কথা বলায় আমি ক্লিয়ার করার জন্য তাকে বলি, আমাদের কেউ যায়নি। যতটুকু শুনেছি, লোকজন বলেছিল, মুকুলকে তো আমরা চিনি, আপনারা কারা? আপনারা মুকুলকে চেনেন কি না? উত্তরে তারা মুকুলকে চেনেন না বলে জানান।

এতে ফ্যাক্টরির লোকজনের সন্দেহ হয়।’ আসাদুল (মুকুল) বলেন, ‘টাকা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। ফ্যাক্টরির সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’ বিকেল সাড়ে ৫টায় আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ সোহরাব আল হোসাইন বলেন, ‘রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত