ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রাথমিক শিক্ষকদের ৩ দাবি পূরণ নিয়ে বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত

প্রাথমিক শিক্ষকদের ৩ দাবি পূরণ নিয়ে বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত

বেতন বৈষম্য নিরসনসহ তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের টানা তিনদিন কর্মবিরতির পর টনক নড়ে অন্তর্বর্তী সরকারের। কর্মবিরতির চতুর্থ দিনে এসে কর্মসূচির ডাক দেওয়া প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি-দাওয়া পূরণে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দেওয়ায় কর্মবিরতি স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। বৈঠক শেষে প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া পূরণে কী আলোচনা হলো, তা জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। প্রাথমিকের শিক্ষক নেতারা জানান, বৈঠকে তিন দফা দাবি নিয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি দাবি সরকারের পক্ষ থেকে একরকম মেনে নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির এ দুটি দাবি বাস্তবায়ন হবে বলে শিক্ষকদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।

তারা জানান, সহকারী শিক্ষকদের তিন দফার মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল ‘প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি’। এ দাবিটি নিয়ে সরকার ইতিবাচক। উপদেষ্টা ও অতিরিক্ত সচিব এবং অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ‘শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি’র বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন।

শিক্ষকদের আরেকটি দাবি ছিল ‘১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন’। এটি নিয়ে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা। শিক্ষকদের নেতাদের ভাষ্য, ‘১০ বছর এবং ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন কার্যক্রম চলমান এবং দ্রুত নিষ্পত্তি হতে যাচ্ছে।’ তবে শিক্ষকদের প্রধান দাবি চাকরির শুরুতে (এন্ট্রি পদে) সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দেওয়ার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা। বৈঠকে ১১তম গ্রেডের বিষয়ের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এটির প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে দিয়েছে। খুব শিগগির শিক্ষক নেতাদের সমন্বয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টাসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তাদের অবস্থান তুলে ধরে চলমান কর্মসূচি স্থগিতের আহ্বান জানান। দ্রুত তাদের শ্রেণিকক্ষে ফেরার অনুরোধ করেন। কর্তৃপক্ষের প্রতি সহযোগী মনোভাব দেখিয়ে চলমান কর্মবিরতি কর্মসূচি আগামী ২৫ জুন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেন ঐক্য পরিষদ নেতারা। উল্লিখিত সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিয়ে দাবি আদায় করার হুঁশিয়ারি দেন তারা। জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের ডাকে গত ৫ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত প্রত্যেক কর্মদিবসে এক ঘণ্টা কর্মবিরতির মধ্যদিয়ে শিক্ষকদের এ দফার আন্দোলন শুরু হয়। ১৭ মে থেকে দুই ঘণ্টা এবং ২১ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত আধাবেলা কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা। এরপর ২৬ জুন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দেন সহকারী শিক্ষকরা। চার দিনের মাথায় সরকারের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করলেন তারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত