ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ডিসি সম্মেলনে অগ্রাধিকার পাবে আইনশৃঙ্খলা

ডিসি সম্মেলনে অগ্রাধিকার পাবে আইনশৃঙ্খলা

আজ রোববার থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, আজ সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টা তার কার্যালয়ের শাপলা হলে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। ডিসি সম্মেলনে বিভিন্ন অধিবেশন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, দিকনির্দেশনা গ্রহণ এবং সমাপনী অনুষ্ঠানসহ ৩৪টি কার্য-অধিবেশন থাকবে। সরকারের নীতিনির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ডিসি সম্মেলনকে সামনে রেখে এবার ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে পাওয়া এক হাজার ২৪৫টি প্রস্তাবের মধ্যে ৩৫৪টি প্রস্তাব কার্যপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে জনসেবা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধি, জনদুর্ভোগ কমানো, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনের বিকাশ, আইন-কানুন বা বিধিমালা সংশোধন জনস্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে। বেশি সংখ্যক প্রস্তাব সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের, ২৮টি।

তিনি জানান, সম্মেলনের প্রধান প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম জোরদারকরণ; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম; স্থানীয় পর্যায়ে কর্মণ্ডসৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন; সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্ন্যান্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ; ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়ের বিষয়গুলোকে আলোচনার জন্য প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।

এবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ডিসিদের কোনো অধিবেশন থাকছে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওনার (রাষ্ট্রপতি) শিডিউলের সঙ্গে মেলেনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি শুরু হবে একটি ভিডিও প্রদর্শনের মাধ্যমে। যেখানে এই আন্দোলনটা কীভাবে হয়েছিল, কীভাবে আন্দোলনের ফল লাভ হলো সেই বিবরণ সেখানে থাকবে। সুতরাং আপনারা বুঝতে পারছেন আমরা গুরুত্ব দিয়ে এটা করছি। এছাড়া বিপ্লবোত্তর আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টিও আমরা শুরুতেই তুলব। সেখানে এটি প্রাধান্য পাবে বলে আমরা আশা করছি। তিনি বলেন, গত বছর ডিসি সম্মেলনের বাজেট ছিল ২ কোটি টাকার কিছু বেশি। এবার আমরা ১ কোটি ৭০ লাখ বা এর কাছাকাছি রাখার চেষ্টা করব। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত বছর ডিসি সম্মেলনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি মোট ৩৮১টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ১৭৭টি সিদ্ধান্ত। বাস্তবায়নাধীন রয়েছে ২০৪টি সিদ্ধান্ত। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৪৬ শতাংশ। যেসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য বিবেচনাধীন রয়েছে, সেসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন হিসাবে দেখানো হয়েছে। যেসব সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ/সিদ্ধান্তের অধিকাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে, সেসব সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িত হিসাবে দেখানো হয়েছে। প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়/বিভাগ/কার্যালয়ের যথাযথ তৎপরতা, আন্তরিকতা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা থাকায় জেলাপ্রশাসক সম্মেলন ২০২৪-এ গৃহীত সিদ্ধান্তের শতকরা ৪৬ ভাগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার পর পূর্ববর্তী সরকারের দর্শনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে বিগত জেলাপ্রশাসক সম্মেলনগুলোর তুলনায় এ বছর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হার কম হয়েছে। তবে মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন হলে গত বছরের সম্মেলনের বাস্তবায়ন অগ্রগতি হার ৪৬ শতাংশ থেকে আরো বৃদ্ধি পাবে। গত ডিসি সম্মেলনে নেয়া বিভিন্ন স্থাপনার নাম বিশেষ কোনো ব্যক্তির নামে করার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত